পাতা:আনন্দীবাঈ ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম (১৯৫৭).pdf/১৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যযাতির জরা
১৫৭

দাঁড়িয়েছে, সে আর আগেকার মতন পিতৃভক্ত আজ্ঞাপালক পুত্র নয়, তার জরা ছাড়তে চায় না, যেন কতই দুর্লভ সামগ্রী। যদি নিতান্তই তাকে বশে আনতে না পারি তবে কোনও স্থবির ব্রাহ্মণ বা ক্ষত্রিয়কে আমার বয়স দিয়ে তাঁর জরা নেব।

 রাজপত্নীদের মধ্যে যিনি কনিষ্ঠা সেই করঞ্জাক্ষী বললেন, মহারাজ, এই যদি আপনার অভিপ্রায় ছিল তবে আমাদের পাণিগ্রহণ করেছিলেন কেন? আপনি বহু পত্নীর স্বামী, নিজের যৌবন ভোগ করার পর আবার পুত্রের যৌবন ভোগ করেছেন। আপনার যৌবনে অরুচি হতে পারে, কিন্তু আমাদের তো হয় নি। আমাদের অনাথা করে যদি জরা গ্রহণ করেন তবে আপনার মহাপাপ হবে।

 যযাতি বললেন, আমি মন স্থির করে ফেলেছি, আমার সংকল্প বদলাতে পারি না। তোমাদের সকলকেই আমি পত্নীত্ব থেকে মুক্তি দিলাম, প্রচুর অর্থও রাজকোষ থেকে পাবে। ইচ্ছা করলে আবার বিবাহ করতে পার।

 করঞ্জাক্ষী তীক্ষ্ণকণ্ঠে বললেন, মহারাজ, আপনার কাণ্ডজ্ঞান লোপ পেয়েছে। আমরা সকলেই সন্তানবতী, কে আমাদের পত্নীত্বে বরণ করবে? সবৎসা ধেনুর যে মূল্য সবৎসা নারীর তা নেই।

 যযাতি বললেন, আচ্ছা আচ্ছা, তোমাদের জন্য যথোপযুক্ত ব্যবস্থা করা হবে। নূতন পতি যদি নাও জোটে তথাপি সুখে থাকতে পারবে। এখন যাও, আমার বিস্তর কাজ।


পুত্রের মত পরিবর্তনের জন্য যযাতি অনেক চেষ্টা করলেন কিন্তু কোনও ফল হল না। তখন তাঁর আজ্ঞানুসারে রাজমন্ত্রী এই ঘোষণা করলেন।—ভো ভো বিদ্যাবিনয়সম্পন্ন সদ্‌বংশজাত স্থবির