পাতা:আনন্দীবাঈ ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম (১৯৫৭).pdf/১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আনন্দীবাঈ
১১

 বাড়িতে মহা শোরগোল পড়ে গেল। আত্মীয়া যাঁরা ছিলেন তাঁরা আনন্দীকে সান্ত্বনা দিতে লাগলেন। শেঠজীর জন্যে খজনচাঁদ তখনই ডাক্তার ডেকে আনালেন।


সাত দিন পরে শেঠজী অনেকটা সুস্থ হয়েছেন এবং দোতলার বারান্দায় আরাম কেদারায় বসে গড়গড়ি টানছেন। তাঁর মাথায় এখনও ব্যাণ্ডেজ আছে, মুখে স্থানে স্থানে স্টিকিং গ্লাসটারও আছে।

 খজনচাঁদ এসে বললেন, কহিএ শেঠজী, তবিয়ত কৈসী হৈ।

 শেঠজী বললেন, অনেক ভাল। শোন খজন-ভাই, রাজহংসী আর বলাকার সঙ্গে আমি সম্পর্ক রাখতে চাই না। তুমি তুরন্ত বোম্বাই আর কলকাতায় গিয়ে একটা মিটমাট করে ফেল, যত টাকা লাগে আমি দেব। ওই মুম্বইবালী আর কলকাত্তাবালী শুধু আমার টাকা চায়, আমাকে চায় না, কিন্তু আনন্দী আমাকেই চায়। খুশবু পাচ্ছ? আনন্দী নিজে আমার জন্যে ড়হর ডালের খিচ্‌ড়ি বানাচ্ছে। আর এই দেখ, গলাবন্ধ বুনে দিয়েছে।

 খজনচাঁদ বললেন, বহুত খুশি কি বাত। শেঠজী, ভাববেন না, আমি সব ঠিক করে দেব। আপনি আনন্দীবাঈকে মথুরা বৃন্দাবন দ্বারকায় ঘুরিয়ে আনুন, তাঁর মেজাজ ভাল হয়ে যাবে।

 পত্নীর সেবায় ত্রিক্রমদাস শীঘ্র সেরে উঠলেন। খজনচাঁদের চেষ্টায় রাজহংসী আর বলাকার সঙ্গে মিটমাট হয়ে গেছে, জুলফিকার খাঁও পান খাবার জন্যে মোটা টাকা পেয়েছেন। কলকাতার সব চেয়ে বড় জ্যোতিষসম্রাট জ্যোতিষচন্দ্র জ্যোতিষার্ণবের কাছ থেকে আনন্দীবাঈ হাজার টাকা দামের একটি বশীকরণ কবচ আনিয়ে স্বামীর গলায়