পাতা:আনন্দীবাঈ ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম (১৯৫৭).pdf/২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চাঙ্গায়নী সুধা
১৫

কথা আর বলবেন না মুখুজ্যে মশাই, মনে বড় ব্যথা পাই। অচলা তার আগেকার স্বামী বলহরির সঙ্গেই চলে গেছে। বলহরি তাকে জোর করে নিয়ে গেছে, আমার পঞ্চাশটা টাকাও ছিনিয়ে নিয়েছে, অচলার জন্যে এখান থেকে যে খানকতক চপ নিয়ে গিয়েছিলুম তাও সেই রাক্ষসটা কেড়ে নিয়ে খেয়ে ফেলেছে।

 কপিল গুপ্ত বললেন, যাক, গতস্য অনুশোচনা নাস্তি, এখন আপনার সন্ন্যাসের ইতিহাস বললুন। আহা, লজ্জা করছেন কেন, চা আর খাবার খেতে খেতেই বলুন, আমরা শোনবার জন্যে সবাই উদ্‌গ্রীব হয়ে আছি। ওহে কালীবাবু, বকশী মশাইকে আরও এক পেয়ালা চা আর এক প্লেট খাবার দাও, গোটা দুই বর্মা চুরুটও দাও, সব আমার খরচায়।

 চায়ের পেয়ালায় চুমুক দিয়ে জটাধর বললেন, নেহাতই যদি শুনতে চান তো বলছি শুনুন। অচলা চলে যাবার পর মনে একটা দারুণ বৈরাগ্য এল, সংসারে ঘেন্না ধরে গেল। দুত্তোর বলে একটি তীর্থযাত্রী দলের সঙ্গে বেরিয়ে পড়লাম। ঘুরতে ঘুরতে মানস সরোবর কৈলাস পর্বতে এসে পৌঁছলাম। সেখানে হঠাৎ কানহাইয়া বাবার সঙ্গে দেখা হয়ে গেল। তাঁর পূর্বনাম কানাই বটব্যাল, খুব বড় সায়েণ্টিস্ট ছিলেন, অনেক রকম কারবারও এককালে করেছেন। শেষ বয়সে বিবাগী হয়ে হিমালয়ের একটি গুহায় পাঁচটি বৎসর তপস্যা করে সিদ্ধ হয়েছেন। আমার সঙ্গে পর্বে একটু পরিচয় ছিল, দেখা মাত্র চিনে ফেললেন। তাঁর পা ধরে আমার দুঃখের সব কথা তাঁকে নিবেদন করলুম। কানু ঠাকুর বললেন, ভেবো না জটাধর, নিষ্কাম হয়ে কর্মযোগ অবলম্বন কর, আমার শিষ্য হও। আমি সংকল্প করেছি এই মানস সরোবরের তীরে একটি বড় মঠ প্রতিষ্ঠা করব, তাতে যাত্রীরা আশ্রয় পাবে। তিব্বত সরকারের পারমিশন পেয়েছি, দালাই লামা তাসী লামা পঞ্চেন লামা