পাতা:আনন্দীবাঈ ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম (১৯৫৭).pdf/২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চাঙ্গায়নী সুধা
১৭

মহারাজের ফরমাশে গজানন শেঠজী বানিয়ে দিয়েছেন। তাঁর অ্যালুমিনিয়মের কারখানা আছে কিনা।

 রামতারণ প্রশ্ন করলেন, কি আছে ওটাতে? চলবল করছে যেন।

 —আজ্ঞে, এতে আছে চাঙ্গায়নী সুধা, আপনাদের জন্যেই এনেছি।

 রামতারণ বললেন, মৃতসঞ্জীবনী সুধা জানি, চাঙ্গায়নী আবার কি?

 —এ এক অপূর্ব বস্তু মুখুজ্যে মশাই, কানু মহারাজের মহৎ আবিষ্কার। খেলে মন প্রাণ চাঙ্গা হয় তাই চাঙ্গায়নী সুধা নাম।

 —মদ নাকি?

 —মহাভারত! কানু মহারাজ মাদক দ্রব্য স্পর্শ করেন না, চা পর্যন্ত খান না। চাঙ্গায়নীতে কি আছে শুনবেন? আপনাদের আর জানাতে বাধা কি, কিন্তু দয়া করে ফরমূলাটি গোপন রাখবেন।

 কপিল গুপ্ত বললেন, ভয় নেই বকশী মশাই, আমরা এই ক জন ছাড়া আর কেউ টের পাবে না।

 —তবে শুনুন। এতে আছে কুড়িটি কবরেজী গাছ-গাছড়া, কুড়ি রকম ডাক্তারী আরক, কুড়ি রকম হোমিও গ্লোবিউল, কুড়ি দফা হেকিমী দাবাই, তা ছাড়া তান্ত্রিক স্বর্ণভস্ম হীরকভস্ম বায়ুভস্ম ব্যোমভস্ম, রাজ্যের ভিটামিন, আর পোয়াটাক ইলেকট্রিসিটি। আর আছে হিমালয়জাত সোমলতা, যাকে আপনারা সিদ্ধি বলেন, আর কাশ্মীরী মকরন্দ। এই সব মিশিয়ে বকযন্ত্রে চোলাই করে প্রস্তুত হয়েছে। কানু ঠাকুর বলেন, এই চাঙ্গায়নী সুধাই হচ্ছে প্রাচীন ঋষিদের সোমরস, উনি শুধু ফরমুলাটি যুগোপযোগী করেছেন।

 অতুল হালদার উরুতে চাপড় মেরে বললেন, আরে মশাই এই রকম জিনিসই তো আজ দরকার। একটু আগেই বলেছিলুম কিঞ্চিৎ সিদ্ধির-শরবত হলেই আমাদের এই বিজয়া সম্মিলনীটি নিখুঁত হয়।