পাতা:আনন্দীবাঈ ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম (১৯৫৭).pdf/৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বটেশ্বরের অবদান
২৯

দু লাখ পাঠক আর চার লাখ পাঠিকা চটে গিয়ে আপনাকে শাপ দেবে, আপনার এই কুকর্মের ফল পরলোকে ভুগতে হবে। একটু সাবধানে থাকবেন মশাই, এখনকার ছোকরারা ভাল নয়। আচ্ছা, চললুম। যদি হাড়টাড় ভাঙে তো খবর দেবেন। নমস্কার।

 সঞ্জীব ডাক্তার বটেশ্বরের মন খারাপ করে দিয়ে চলে গেলেন। গতকাল সকালে যে ছোকরা এসেছিল—প্রিয়ব্রত রায়—সে পাগল হলেও শান্তশিষ্ট। কিন্তু এই সঞ্জীব ডাক্তার দুর্দান্ত উন্মাদ। শুধু উন্মাদ নয়, মনে হয় ফাজিল বকাটে আর মাতালও বটে। এমন লোকের চিকিৎসায় পসার হল কি করে? যাই হ’ক, পাগলদের কথায় বটেশ্বর কর্ণপাত করবেন না, তাঁর সংকল্পিত প্লট কিছুতেই বদলাবেন না। কিন্তু সঞ্জীব ডাক্তার ভয় দেখিয়ে গেছে, সাবধানে থাকতে হবে।


তিন দিন পরের কথা। বিকালবেলা দোতলার বারান্দায় বসে বটেশ্বর চুরট টানছেন। তাঁর বাতের বেদনাটা বেড়ে উঠেছে, সিঁড়ি দিয়ে নামাওঠায় কষ্ট হয়। ছেলেমেয়েদের নিয়ে গৃহিণী কাশীপরে তাঁর ছোট বোনের বাড়ি বেড়াতে গেছেন। বটেশ্বরের কোথাও যাবার জো নেই, কথা কইবার লোকও নেই। তাঁর অনুরক্ত বন্ধুদের কেউ যদি এখন এসে পড়েন তো তিনি খুশী হন।

 চাকর এসে খবর দিল, একজন মহিলা দেখা করতে এসেছেন। বটেশ্বর বললেন, এখানে নিয়ে আয়।

 একটি সুবেশা চব্বিশ-পঁচিশ বছরের মেয়ে তাঁর কাছে এল, একটু মোটা হলেও বেশ সুন্দরী বটে। সে ভূমিষ্ঠ হয়ে প্রণাম করে পায়ে হাত দিলে। বটেশ্বর বললেন, থাক থাক, ওই হয়েছে। কোথা থেকে আসা হচ্ছে?