পাতা:আনন্দীবাঈ ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম (১৯৫৭).pdf/৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নির্মোক নৃত্য
৩৯

 সহাস চক্ষুর ইঙ্গিতে উর্বশী ইন্দ্রকে জানালেন যে কর্দমও কাবু হয়েছেন।

 তার পর উর্বশী ক্রমশ তাঁর সমস্ত আবরণ আর আভরণ খুলে ভূমিতে নিক্ষেপ করলেন এবং অবশেষে ‘কুন্দশুভ্র নগ্নকান্তি’ প্রকাশ করে পাষাণবিগ্রহবৎ নিশ্চল হয়ে দাঁড়িয়ে রইলেন।

 সভাস্থ দেবগণ দেবর্ষিগণ ও মহর্ষিগণ বললেন, সাধু সাধু!

 কুতুক বললেন, থামলে কেন উর্বশী, আরও নির্মোক ত্যাগ কর।

 নারদ বললেন, আর নির্মোক কোথায়? উর্বশী তো সমস্তই মোচন করেছে।

 কুতুক বললেন, ওই যে, ওর সর্বগাত্রে একটি পদ্মপলাশতুল্য শুভ্রারক্ত মসৃণ আবরণ রয়েছে।

 —আরে ও তো ওর গায়ের চামড়া।

 —ওটাও খুলে ফেলক।

 —পাগল হলেন নাকি হে কুতুক? গায়ের চামড়া তো শরীরেরই অংশ, ও তো পরিচ্ছদ নয়।

 —পরিচ্ছদ না হ’ক নির্মোক তো বটে। ওই খোলসটাও খুলে ফেলক, নীচে কি আছে দেখব।

 নারদ বললেন, কি আছে শোন। চর্মের নীচে আছে মেদ, তার নীচে মাংস, তার নীচে কংকাল।

 —তার নীচে কি আছে?

 —কিচ্ছু নেই।

 —যার প্রভাবে ‘অকস্মাৎ পুরুষের বক্ষোমাঝে চিত্ত আত্মহারা, নাচে রক্তধারা’, উর্বশীর সেই নারীত্ব কোথায় আছে?

 —নারীত্ব আছে ওর বসনে, আভরণে, অঙ্গপ্রত্যঙ্গে, ভাবভঙ্গীতে,