পাতা:আনন্দীবাঈ ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম (১৯৫৭).pdf/৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫০
আনন্দীবাঈ ইত্যাদি

হলেও অতি সরলমতি এবং লোকব্যবহারে অনভিজ্ঞ। রাজসভায় আসার পূর্বে দুর্দৈবক্রমে শিলীন্ধ্রীর সঙ্গে এঁর সাক্ষাৎ হয়েছিল। সেই ব্যাপিকা প্রগল্‌ভা দুর্বিনীতা রমণী এঁকে যা শিখিয়েছে তাই ইনি শুক পক্ষীর ন্যায় আবৃত্তি করেছেন।

 রাজা বললেন, ডম্বরু তাঁর ভ্রম বুঝতে পেরেছেন?

 —মহারাজ, ডম্বরু বলতে চান, আপনার সম্বন্ধে প্রত্যক্ষ জ্ঞান না থাকায় শিলীন্ধ্রীর বাক্যই উনি মেনে নিয়েছিলেন। এখন উদরপূর্তির পর ইনি বুঝেছেন যে পরপ্রত্যয়ে চালিত হওয়া মূঢ়বুদ্ধির লক্ষণ। অতএব ইনি আপনার আশ্রয়ে থেকে আপনার সম্বন্ধে সম্যক জ্ঞান লাভ করে যথার্থ প্রশস্তি রচনা করতে চান। আপনি কৃপা করে ডম্বরুর প্রার্থনা পূরণ করুন, এঁকে অন্যতম সভাসদের পদ দিন।

 —কোন্ কর্মের ইনি যোগ্য?

 —মহারাজ, আপনার সভায় বিদুষক নেই, ডম্বরুকে বিদূষক নিযুক্ত করুন।

 —বলেন কি! ইনি তো শুষ্ককাষ্ঠতুল্য নীরস, কৌতুকের কিছমাত্র বোধ আছে মনে হয় না।

 —মহারাজ, কৌতুক উৎপাদনের সহজাত শক্তি এঁর আছে, নিজের অজ্ঞাতসারেই ইনি আপনার এবং এই রাজসভার সকলের মনোরঞ্জন করতে পারবেন, যেমন আজ করেছেন।

 রাজা সহাস্যে বললেন, উত্তম প্রস্তাব। ওহে ডম্বরু পণ্ডিত, তোমাকে বিদুষকের পদ দিলাম। মন্ত্রী, কবি কালিদাসের সঙ্গে পরামর্শ করে তুমি ডম্বরুর জন্য উপযুক্ত বৃত্তি ও বাসগৃহের ব্যবস্থা করে দাও।

 এতক্ষণে ডম্বরু কিঞ্চিৎ সুস্থ বোধ করলেন। চক্ষু উন্মীলিত করে হাতে ভর দিয়ে উঠে বললেন, মালবপতি মহামতি বিক্রমাদিত্যের