পাতা:আনন্দীবাঈ ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম (১৯৫৭).pdf/৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দুই সিংহ
৫৩

শুনে হেসে বললেন, বেশ তো, এতদিন আমরা তোদের মানুষ করেছি, লেখাপড়া শিখিয়েছি, এখন তোরাই আমাদের তালিম দিয়ে সভ্য করে নে।

 বাপ-মাকে অভিজাত সভ্য সমাজের যোগ্য করবার জন্যে ছেলেমেয়ে উঠে-পড়ে লেগে গেল। বিখ্যাত ক্লাব ‘সজ্জন সংগতি’র নাম আপনারা শুনে থাকবেন। তার সেক্রেটারি কপোত গুহ বার-অ্যাট-ল আর তাঁর স্ত্রী শিঞ্জিনী গুহর সঙ্গে সুমন্ত আর সুমিত্রার আলাপ আছে। দুজনে গুহ দম্পতিকে ধরে বসল তাঁরা যেন বেচারাম আর সুবালাকে পালিশ করবার ভার নেন। কপোত আর শিঞ্জিনী সানন্দে রাজী হলেন এবং বেচারামের বাড়িতে ঘন ঘন আসতে লাগলেন। কর্তার তালিমের ভার মিস্টার গুহ আর গিন্নীর ভার মিসিস গুহ নিলেন। বেচারাম কৃপণ নন, নিজেদের শিক্ষার জন্যে উপযুক্ত মাসিক দক্ষিণার প্রস্তাব করলেন। কপোত গুহ প্রথমে ভদ্রোচিত কুণ্ঠা প্রকাশ করে অবশেষে নিতে রাজী হলেন। ঘর সাজানো, খাবার ব্যবস্থা, পোশাক, গহনা, কথাবার্তার কায়দা, সব বিষয়েই সংস্কারের চেষ্টা হতে লাগল। বেচারাম গোঁফহীন হলেন, ব্যাক-ব্রশ করলেন, বাড়িতে ধুতির বদলে ইজার পরতে লাগলেন। কিন্তু সুবালা কিছুতেই পানদোক্তা ছাড়লেন না, দাঁত বাঁধাতেও রাজী হলেন না। শিঞ্জিনী বার বার সতর্ক করে দিলেও সুবালার গ্রাম্য উচ্চারণ দূর হল না।


ম্প্রতি বিম্বিসার রোডে বেচারামবাবুর প্রকাণ্ড বাড়ি হয়েছে, তার প্ল্যান কপোত গুহই আগাগোড়া দেখে দিয়েছেন। গৃহপ্রবেশ হয়ে যাবার কিছুদিন পরে সামন্ত বলল, বাবা, এবারে বাড়িতে একটা পার্টি লাগাও। তোমার আত্মীয় কুটুম্ব বড়-সায়েব ছোট-সায়েব