পাতা:আনন্দীবাঈ ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম (১৯৫৭).pdf/৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দুই সিংহ
৫৯

বাঙালী সাহিত্যিকবর্গের প্রতিনিধিরূপে অত্র সভায় অস্মিন মুহূর্তে শ্রীযুক্ত বটেশ্বর সিকদার মহাশয়কে উপাধি দিলাম—অপ্রতিদ্বন্দ্বী গল্পশিল্পসম্রাট। যার সাহস আছে সে আপত্তি করুক। আমার দস্তানা নেই, এই বাঁ পায়ের মোজাটা খুলে ফেলে চ্যালেঞ্জ করছি, আমার সঙ্গে যে লড়তে চায় সে মোজা তুলে নিক। সবতাতে আমি রাজী আছি—ঘুষি, গাঁট্টা, লাঠি, থান ইট, যা চাও।

 মোজা তুলে নিতে কেউ এগিয়ে এল না। গৌরচাঁদ বলল, নুরু ভাই, জোরসে শাঁখ বাজা। নুরুদ্দিনের মুখ থেকে বিজয়সসূচক কৃত্রিম শঙ্খধ্বনি নির্গত হল—পোঁ-ও-ও।

 কালাচাঁদ চিৎকার করে বলল, বটেশ্বরবাবু, ভাল চান তো এখনই চেয়ার ভেকেট করুন। কি, উঠবেন না? ও দামোদরবাবু দাঁড়িয়ে রয়েছেন কেন, আপনার হকের আসন দখল করুন, এই চেয়ারটাতেই আপনি বসে পড়ুন।

 দামোদর বললেন, ওতে বসবার জায়গা কই?

 কালাচাঁদ আর তার দু জন বন্ধু দামোদরকে ধরে বটেশ্বরের কোলের উপর বসিয়ে দিয়ে বলল— খবরদার উঠবেন না, আমরা আপনাকে ব্যাক করব। এই বুড়ো বটেশ্বর কতক্ষণ আপনার আড়াইমনী বপু ধারণ করতে পারে দেখা যাক।

 হট্টগোল আরম্ভ হল। রাজলক্ষ্মী সাহিত্যভাস্বতী বললেন, ছি ছি ছি, আপনাদের লজ্জা নেই, ছোট ছেলের মতন ঝগড়া করছেন! দু জনেই নেমে পড়ুন চেয়ার থেকে, আসুন আমরা সবাই চায়ের টেবিলে গিয়ে বসি।

 কালাচাঁদ বলল, কারও কথা শুনবেন না দামোদরবাবু, গ্যাঁট হয়ে বটেশ্বরের কোলে বসে থাকুন।