পাতা:আনন্দীবাঈ ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম (১৯৫৭).pdf/৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮০
আনন্দীবাঈ ইত্যাদি

 —বেশ তো, আমার বাড়ির নীচের তলায় পুব দিকের অংশে তুমি থাকবে, একবারে আলাদা আর নিরিবিলি।

 চক্রধর ডাকলেন, চন্দনা, ও চন্দনা।

 একটি মেয়ে ঘরে এল। চক্রধর বললেন, এটি আমার ভাইঝি। প্রণাম কর রে, ইনি তোর কাশী দাদা, দূর সম্পর্কে আমার ভাইপো।

 চন্দনা প্রণাম করে চলে গেল। কাশীনাথ বললেন, তোমাদের কাণ্ড কিছুই বুঝতে পারছি না। মেয়েটার মাথায় সিঁদুর নেই কেন? কপাল পুড়েছে নাকি?

 চক্রধর বললেন, না না, ওর বিয়েই হয় নি। খুব ভাল মেয়ে, বি. এ. পাস করেছে।

 —দুর্গা দুর্গা! এত বড় ধাড়ী মেয়ের বিবাহ হয় নি? বিবি বানাচ্ছ দেখছি।

 —আচ্ছা, কাশীনাথ, তোমার বিবাহের মতলব আছে তো?

 —আছে বইকি। একজন ভাল ঘটক লাগাও।

 —আমার ভাইঝি এই চন্দনাকে বিয়ে কর না?

 —তুমি উন্মাদ হলে নাকি চক্রধর? এক গোত্রে বিবাহ হবে কি করে? তা ছাড়া ও রকম বেয়াড়া স্ত্রী আমার পোষাবে না। সদ্‌বংশের লজ্জাবতী নিষ্ঠাবতী মেয়ে চাই। বিদ্যার দরকার নেই, রান্না আর ঘরকন্নার সব কাজ জানবে, বারব্রত পালন করবে, তোমার গিন্নী আর ভাইঝির মতন ধিঙ্গী হলে চলবে না।

 —মুশকিলে ফেললে কাশীনাথ। তুমি যেরকম পাত্রী চাও তেমন মেয়ে ভদ্র ঘরে আজকাল লোপ পেয়েছে। আচ্ছা, যতটা সম্ভব তোমার পছন্দসই পাত্রীর জন্যে আমি চেষ্টা করব। এখন তুমি স্নান আর সন্ধ্যা-আহ্নিক সেরে আহারাদি কর।