পাতা:আনন্দীবাঈ ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম (১৯৫৭).pdf/৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮৬
আনন্দীবাঈ ইত্যাদি

মতলবই ঠাউরেছ ঠাকুর মশাই! পাগল কি আর গাছে ফলে, তুমি একটি আস্ত উন্মাদ পাগল। শোন হে ছোকরা, তোমার স্ত্রী হলেও আমি বয়সে বড়, গুরুজন তুল্যি। আমার হেপাজতে তুমি থাকবে, আমার বশেই তোমাকে চলতে হবে।

 কাশীনাথ কিছুক্ষণ স্তম্ভিত হয়ে রইলেন, তার পর ‘তারা ব্রহ্মময়ী রক্ষা কর মা’ বলেই চলে গেলেন।

 সন্ধ্যাহ্নিকের পর কাশীনাথ ইষ্টদেবীকে নিজের অবস্থা নিবেদন করলেন।—এ কি বিপদে ফেললে মা! তোমারই বা দোষ কি, নিজের কুবুদ্ধিরই ফল ভোগ করছি। পৃথিবীতে কলি যে এত প্রবল হয়েছে তা তো ভাবতে পারি নি। ব্রাহ্মণের বাড়ি বাবুর্চী রাঁধছে, মুরগি চরছে, বুড়ী মাগীরা জুতো পরে খটমটিয়ে চলছে, ধাড়ী মেয়েরা ইস্কুলে যাচ্ছে। ছোট লোকের আস্পর্ধা বেড়ে গেছে, ব্রাহ্মণকে গ্রাহ্য করে না, সামনেই বিড়ি খায়। এখানে জাত ধর্ম কিছুই রক্ষা পাবে না। ওই গয়েশ্বরী একটা ভয়ংকরী খাণ্ডার মাগী, ওকে বিয়ে করলে আমার নরকভোগের আর বাকী থাকবে না। চক্রধর একটা পাষণ্ড কুলাঙ্গার, আমার বংশধর হতেই পারে না, যমরাজ নিশ্চয় ভুল করে ওর কাছে আমাকে পাঠিয়েছেন। কালী কৈবল্যদায়িনী, উপায় বাতলাও মা।

 শেষরাত্রে কাশীনাথ স্বপ্ন দেখলেন, তাঁর ইষ্টদেবী আবির্ভূত হয়ে হাত নেড়ে বলছেন, সরে পড় কাশীনাথ। তখনই কাশীনাথের ঘুম ভেঙে গেল। তিনি বুঝলেন, এই পাপ সংসারে ফিরে আসা তাঁর মস্ত বোকামি হয়েছে। মন স্থির করে কাশীনাথ তখনই যমদত্ত সেই নিষ্ক্রান্তি বটিকাটি গিলে ফেললেন এবং অবিলম্বে যমলোকে প্রয়াণ করলেন।

 সকাল বেলা কাশীনাথকে পরীক্ষা করে ডাক্তার বললেন, থ্রম্বোসিস।