পাতা:আনন্দী বাঈ - সখারাম গণেশ দেউস্কর.pdf/১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আনন্দী বাঈ।

যমুনাকে পাঠশালায় যাইতে নিষেধ করিলেই তাহার অসুখ সারিয়া যাইত এবং সে সমস্ত দিন ঘরে থাকিয়া দৌরাত্ম্য করিত। এই কারণে ঘরের মধ্যে তাহার পিতা ও মাতামহী ভিন্ন কেহ তাহার প্রতি স্নেহ প্রকাশ করিতেন না। গণপৎ রাও বলিতেন, “আমার যমুনা অসাধারণ বুদ্ধিমতী হইবে। বয়োবৃদ্ধির সহিত তাহরি সদ্‌গুণনিচয় পরিস্ফুট হইবে।” তিনি প্রায়ই স্বীয় বন্ধুগণের সমক্ষে তাহাকে আনিয়া পরীক্ষা দিতে বলিতেন ও তাহার প্রশংসা করিতেন। তাঁহার বন্ধুগণের ইহা ভাল লাগিত না। তাঁহারা বলিতেন, বালিকাদিগকে এইরূপে সর্বদা পুরুষমণ্ডলীর সমক্ষে আনিয়া লেখাপড়ার চর্চ্চা করাইলে তাহারা নিতান্ত প্রগল্‌ভা ও দুঃসাহসিকা হইয়া উঠে।

 যমুনা তাহার জননীর ন্যায় দৃঢ়কায়া ও বলিষ্ঠা ছিল। একদা তাহার মাতৃস্বসা স্বীয় পুত্রের সহিত তাহাকে ‘কুস্তি’ খেলিতে বলেন। তাঁহার পুত্র যমুনা অপেক্ষা অধিক বয়স্ক হইলেও সেরূপ বলিষ্ঠ ছিল না। যমুনা কুস্তিতে তাহাকে সহজেই পরাস্ত করিল। তদবধি যমুনার মাসী তাহাকে “যমুনা মল্ল” বলিয়া ডাকিতেন। শৈশবে যমুনা স্বভাবতঃ এইরূপ বুলবতী ছিল; ইহার উপর মাতামহী তাহার স্বাস্থ্যের ও খাদ্যাদির প্রতি বিশেষ দৃষ্টি রাখিতেন। এই কারণে সপ্তম-বর্ষ-বয়সেই তাহার দেহ এরূপ বিকাশ প্রাপ্ত হইয়াছিল যে, তাহাকে দেখিলে সহসা দশমবর্ষীয়া বলিয়া ভ্রম হইত। কাজেই শীঘ্র যমুনার বিবাহ জন্য সকলেই তাহার পিতাকে উত্ত্যক্ত করিতে লাগিল। গণপৎ রাও পাত্রের অনুসন্ধানে বিশেষ