পাতা:আনন্দী বাঈ - সখারাম গণেশ দেউস্কর.pdf/২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪
আনন্দী বাঈ

নৈপুণ্যলাভ ও হস্তাক্ষর সুন্দর হইল। কিন্তু তাঁহাকে স্বেচ্ছামত শিক্ষিতা করিতে গিয়া গোপাল রাও এরূপ বিপন্ন হইলেন যে, তাঁহাকে অল্প দিবসের মধ্যেই বাধ্য হইয়া আলিবাগ পরিত্যাগ করিতে হয়।

 ইংরাজী শিক্ষাদানের সঙ্গে সঙ্গে গোপাল রাও স্বীয় পত্নীকে লইয়া প্রায়ই সমুদ্রতীরে বায়ু-সেবনার্থ গমন করিতেন। ইহাতে অনেকেরই দৃষ্টি তাঁহার ব্যবহারের প্রতি আকৃষ্ট হয়। মহারাষ্ট্র-সমাজে অবগুণ্ঠন ও অবরোধের প্রথা না থাকিলেও এরূপভাবে যুবতী পত্নীকে লইয়া সমুদ্র তীরে ভ্রমণ সাধারণের চক্ষে দূষণীয় বলিয়া প্রতীয়মান হইল। এই কারণে দুষ্ট জনেরা গোপাল রাওকে লইয়া নানা প্রকার রহস্য বিদ্রূপ করিতে লাগিল। পরিশেষে তাহারা তাঁহাকে এরূপ উত্ত্যক্ত করিয়া তুলিল যে তিনি কোহ্লাপুরে আপনার বদলি করিয়া লইলেন। এই সময়ে আনন্দী বাঈর বয়ঃক্রম ত্রয়োদশ বৎসর ছিল।

 কোহ্লাপুর দেশীয় করদ রাজ্য। তত্রত্য রাজপুরুষেরা স্ত্রীশিক্ষা বিষয়ে মনোযোগপ্রকাশ করিতেন। সেখানকার মহারাজের ব্যয়ে তথায় একটি স্ত্রী-বিদ্যালয় স্থাপিত হইয়াছিল। কুমারী মাইসী নাম্নী এক শ্বেতাঙ্গ-মহিলা সেই বিদ্যালয়ে শিক্ষাদানের কার্য্যে নিয়োজিতা ছিলেন। এই সকল সংবাদ অবগত হইয়াই গোপাল রাও কোহ্লাপুরে গমন করিয়াছিলেন। কিন্তু পাশ্চাত্য প্রণালী ক্রমে-স্ত্রীকে শিক্ষিত করিবার তাহার ইচ্ছা ছিল বলিয়া কোহ্লাপুরেও তিনি অনেকের উপহাসের পাত্র হইলেন। তিনি