পাতা:আনন্দী বাঈ - সখারাম গণেশ দেউস্কর.pdf/২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬
আনন্দী বাঈ

বর্ষীয়া আনন্দী বাঈর স্বধর্ম্মে নিষ্ঠা এরূপ দৃঢ় ছিল যে, কিছুতেই তাঁহার মতান্তর ঘটে নাই।

 কোহ্লাপুরে আনন্দী বাঈর শিক্ষার সুবিধা বিলুপ্ত হওয়ায় গোপালরাও ১৮৭৯ খৃষ্টাব্দের প্রারম্ভে বোম্বাইয়ে গমন করিলেন। তথায় এক মিশনরি স্কুলে আনন্দ বাঈর শিক্ষার বন্দোবস্ত হয়। আনন্দী বাঈ প্রত্যহ একাকিনী পদব্রজেই বিদ্যালয়ে গমন করিতেন। তদ্ভিন্ন তাহার বেশও কিয়ৎ পরিমাণে পাশ্চাত্য ভাবাপন্ন ছিল। এই কারণে বোম্বাইয়ের ইতর লোকেরা, প্রধানতঃ বণিক, তাম্বুলী ও সামান্য শস্য-ব্যবসায়ীয়া প্রায়ই পথিমধ্যে তাঁহাকে দেখিয়া পরিহাস বিদ্রূপ করিত।

 এই সময়ে গোপাল রাওয়ের পিতা বিনায়ক রাও পুত্রের সহিত সাক্ষাৎ করিবার জন্য বোম্বাইয়ে গমন করিয়াছিলেন। তিনি পুত্রের ও পুত্রবধূর কার্য্য দর্শনে অতীব ব্যথিত হন। কারণ, মহারাষ্ট্র দেশে বহুদিন হইতে সাধারণ ভাবে স্ত্রীশিক্ষার প্রচার থাকিলেও উহা বর্ত্তমান কালের অনুরূপ ছিল না। খৃষ্টীয় অষ্টাদশ শতাব্দীতে পেশওয়েগণের আমলে অবস্থাপন্ন লোকেরা গৃহে বয়স্ক শিক্ষক রাখিয়া কুলবালাগণকে যথোচিত বিদ্যা শিক্ষা করাইতেন। সে কালের সরদারদিগের ললনাগণ রাজনীতি বিষয়েও উপদেশ লাভ করিতেন এবং সময়ে সময়ে যুদ্ধক্ষেত্র হইতে রাজদরবারে সরদারদিগের অনুষ্ঠিত সমস্ত রাজ-কার্য্যাদির বিবরণী (despatches) লিখিয়া পাঠাইতেন। সেইরূপ গৃহপতিগণের অনুমতি লইয়া বিশ্বস্ত অনুচর ও আত্মীয়ের সহিত প্রকাশ্য রাজপথ