পাতা:আনন্দী বাঈ - সখারাম গণেশ দেউস্কর.pdf/২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দ্বিতীয় অধ্যায়
১৭

দিয়া গমনাগমনও সাধারণতঃ মহারাষ্ট্রীয় ব্রাহ্মণ মহিলাদিগের পক্ষে কখনও নিষিদ্ধ ছিল না এবং এখনও নাই। পাশ্চাত্য শিক্ষার আলোক পাইয়া মহারাষ্ট্র দেশের যুবকগণ সাধারণ বিদ্যালয়ে রমণীদিগকে পদব্রজে একাকিনী পাঠাইবার পক্ষপাতী হওয়াতেই প্রাচীন সমাজের বিশেষ নিন্দাভাজন হইয়াছিলেন। গোপাল রাওয়ের প্রতি তাঁহার পিতার অসন্তোষেরও ইহাই প্রধান কারণ হইয়াছিল। বিদেশীয় উচ্চশিক্ষার বিরুদ্ধে পুত্রকে বহু উপদেশ দিয়াও তিনি যখন কৃতকার্য্য হইতে পারিলেন না, তখন ক্রোধভরে, আর পুত্রের মুখদর্শন করিবেন না, বলিয়া বোম্বাই পরিত্যাগ করিলেন।

 বোম্বাইয়ে মিশনরি বিদ্যালয়ে শিক্ষার কালে আনন্দী বাঈ সর্ব্বদা শ্রেণীর প্রথম স্থান অধিকারে চেষ্টা করিতেন। তত্রত্য শিক্ষয়িত্রী ও বিদ্যার্থিনীগণের সহিত তাঁহাকে ইংরাজীতে কথা কহিতে হইত বলিয়া তিনি ইংরাজী ভাষায় অল্প দিনের মধ্যেই অধিকার লাভ করিয়াছিলেন। ইংরাজী ভাষা শিক্ষার সহিত ইংরাজ মহিলাদিগের ন্যায় তিনি যাহাতে স্বতন্ত্রভাবে থাকিতে শিক্ষা করেন, সে বিষয়েও গোপাল রাও চেষ্টার ত্রুটি করেন নাই। আলিবাগ হইতে কোহ্লাপুর গমনকালে পথিমধ্যে একদিন আনন্দী বাঈকে বাসায় একাকিনী পরিত্যাগ করিয়া তিনি অষ্ট প্রহরের অধিক কাল কোথায় অন্তর্হিত হইয়াছিলেন। ত্রয়োদশবর্ষীয়া বালিকা বিদেশে অপরিচিত স্থানে এইরূপ সংকটে পড়িয়া কিরূপ ভয়বিহ্বলা হইয়াছিলেন, তাহা সহজেই বুঝিতে পারা যায়। বোম্বাইয়ে