পাতা:আনন্দী বাঈ - সখারাম গণেশ দেউস্কর.pdf/২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২২
আনন্দী বাঈ

ক্রোধাদি মনোবিকারের প্রভাব অল্প।” আর একখানি পত্রে তিনি লিখিয়াছেন,—“ইউয়োপীয়দিগের বিশ্বাস, হিন্দু শাস্ত্রে সভ্যজাতিগণের শিক্ষার যোগ্য বিষয় কিছুই নাই। তাঁহাদিগের এই ধারণা যে ভ্রমাত্মক, তাহা দেখাইবার জন্যই আমি সংস্কৃত শিখিতেছি। আমি নিরামিষ ভোজন ও দেশীয় বেশ-ভূষা করিয়া থাকি। বিবি সাজিবার আমার আদৌ ইচ্ছা নাই। অতএব সম্পূর্ণরূপে স্বদেশীয় রীতিনীতি রক্ষা করিয়া আমেরিকায় বাস করা আমার পক্ষে সম্ভব হইবে কিনা, আমায় জানাইবেন।” কোন কোন পত্রে শ্রীমতী কার্পেণ্টারের নিকট তিনি স্বদেশীয়দিগের বারব্রতাদির আধ্যাত্মিক ব্যাখ্যাও করিয়াছেন। তাঁহার একাধিক পত্রে মিশনরিগণ “একগুয়ে, পরধর্ম্মবিদ্বেষী ও সংকীর্ণ চিত্ত” বলিয়া বর্ণিত হইয়াছেন।

 আনন্দী বাঈ ভূতপ্রেতে বিশ্বাস করিতেন। এ সম্বন্ধে তিনি একখানি পত্রে শ্রীমতী কার্পেণ্টারকে লিখিয়াছেন,—“ভূতপ্রেতপিশাচাদির প্রতি দিন দিন আমার বিশ্বাস প্রগাঢ়তর হইতেছে। নিদ্রিতাবস্থায় আমি জটিল প্রশ্নসমূহের উত্তর নির্ণয় করিতে পারি। দেশীয় স্ত্রী-পুরুষগণের উপযোগী কাপড় ছাঁটিতে আমি জানিতাম না, তাহা স্বপ্নেই শিক্ষা করিয়াছি। পাঠ্যপুস্তকের যে সকল অংশ মুখস্থ করিতে হইবে, তাহা আমি দিবসে একবার পড়িয়া রাখি। তাহার পর রাত্রিকালে ঘুমের ঘোরে স্বপ্নাবস্থায় সেগুলি বহু বার অভ্যাস করি। প্রাতঃকালে উঠিয়া দেখি, সমস্থই মুখস্থ হইয়া গিয়াছে। কাব্য পাঠকালে যে সকল অংশ অতিশয় দুর্ব্বোধ বলিয়া বোধ হয়, তাহা একবার পড়িয়া ছাড়িয়া দিই; রাত্রিকালে