পাতা:আনন্দী বাঈ - সখারাম গণেশ দেউস্কর.pdf/২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দ্বিতীয় অধ্যায়
২৩

নিদ্রিতাবস্থায় ঐ সকল অংশের প্রকৃত অর্থ আমার জ্ঞানগোচর হয়! প্রাতঃকালে উহার অবিকল ভাষান্তর করা আমার পক্ষে কিছুমাত্র কষ্টকর বোধ হয় না। রাত্রিকালে কে আমায় জটিল বিষয় সকল শিক্ষা দেয়, তাহা আমি বুঝিতে পারি না, কিন্তু আমার পড়া হইয়া যায়। আপনাকে যথার্থ বলিতেছি, ভূতপ্রেতাদিতে বিশ্বাস আমার হৃদয়ে প্রগাঢ়রূপে মুদ্রিত হইয়াছে।”

 শ্রীমতী কার্পেণ্টারের সহিত পত্রযোগে ক্রমশঃ তাহার ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি পাইতে লাগিল। উভয়েই উপহারস্বরূপ স্বদেশের শিল্পসামগ্রী ও অলঙ্কারাদি উভয়ের নিকট পাঠাইতে লাগিলেন। শ্রীমতী কার্পেণ্টারের সহিত পরিচয় ঘটিবার পর হইতে আনন্দী বাঈর ইংরাজী ভাষায় জ্ঞান প্রগাঢ় হইতে লাগিল।

 এই সময়ে বঙ্গদেশের পোষ্ট-মাষ্টার-জেনারেল ডাক-বিভাগে রমণীদিগের নিয়োগ-সম্বন্ধে একটি আদেশ প্রচার করেন। তদ্দর্শনে ঐ বিভাগে আনন্দী বাঈকে একটি কর্ম্মের সংস্থান করিয়া দিবার ইচ্ছা গোপাল রাওয়ের মনে বলবতী হইল। এই কারণে তিনি কলিকাতায় আপনার বদলি করিবার জন্য কর্ত্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করিলেন। ১৮৮১ খৃষ্টাব্দের ৪ঠা এপ্রিল গোপাল রাও সস্ত্রীক কলিকাতা নগরীতে উপস্থিত হন।

 কলিকাতায় আসিয়া আনন্দী বাঈর সুখ-শান্তি একরূপ বিলুপ্ত হইয়াছিল। এখানকার জলবায়ুর দোষে পুনঃ পুনঃ অসুস্থ হইয়া তিনি নিতান্ত রুগ্ন হইয়া পড়িয়াছিলেন। এ দেশে অবরোধপ্রথার কঠোরতাহেতু তাঁহার ব্যবহার-সম্বন্ধে অনেকের মনে অমূলক