পাতা:আনন্দী বাঈ - সখারাম গণেশ দেউস্কর.pdf/৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চতুর্থ অধ্যায়
৫৫

অন্য প্রকারেও নিগৃহীত হইতে হইয়াছিল। তাঁহাকে খৃষ্ট ধর্মে দীক্ষিত করিবার জন্য এই অধ্যাপিকা অনেক যত্ন করিয়াছিলেন। কিন্তু তদ্বিষয়ে বিফলকাম হওয়ায় আনন্দী বাঈর প্রতি তিনি নানা প্রকারে বিরাগ-প্রকাশ করিতে লাগিলেন। সেজন্য সময়ে সময়ে আনন্দী বাঈকে উপবাসেও দিনপাত করিতে হইয়াছিল।

 এই সকল কষ্ট সহ্য করিয়াও আনন্দী বাঈ প্রাণপণে কলেজের শিক্ষণীয় বিষয় সমূহ আয়ত্ত করিতে লাগিলেন। এই সময়ে ভারতবর্ষ হইতে কোনও নরপশু তাঁহাকে অতি কুৎসিৎ ভাষায় এক পত্র লিখিয়া মর্ম্মপীড়া প্রদান করে। ঐ পত্র পাঠ করিয়া আনন্দী বাঈ এরূপ মর্ম্মাহত হইয়াছিলেন যে, দশ দিন পর্য্যন্ত আহার ও নিদ্রায় তিনি কোনরূপ সুখশান্তি লাভ করিতে পারেন নাই। পরিশেষে একদিন তিনি স্বপ্নে দেখিলেন যে, একটী দিব্যরূপধারিণী রমণী আসিয়া তাঁহাকে এই পত্রের জন্য দুঃখবোধ করিতে নিষেধ-পূর্ব্বক সান্ত্বনা প্রদান করিতেছেন। তদবধি তাঁহার বিষণ্ণতা দূরীভূত হইল।

 এই সকল পাপের হস্ত হইতে উদ্ধার পাইতে না পাইতে গোপাল রাও তাঁহার প্রতি বিরূপ হইলেন। প্রথমে আনন্দী বাঈ স্বামীকে প্রতি সপ্তাহে যথা নিয়মে বিস্তারিত পত্র লিখিতেন। ফিলাডেলফিয়ায় গমনের পর হইতে অবসরের অভাবে স্বামীকে পত্র লিখিতে তাঁহার প্রায়ই বিলম্ব ঘটিত। তদ্ভিন্ন গোপাল রাও কখনও তাহাকে প্রতি সপ্তাহে একখানি করিয়া কার্ড লিখিতে বলিতেন; আবার কখনও বলিতেন,—“মাসে চারিবার সংক্ষিপ্ত