পাতা:আনন্দী বাঈ - সখারাম গণেশ দেউস্কর.pdf/৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পঞ্চম অধ্যায়
৬৫

দোকান হইতে উহা কিনিবেন না। ইংরাজ শিল্পীর নির্ম্মিত দ্রব্যাদিব্যবহারে আমার আদৌ গৌরব বোধ হয় না।”

 আনন্দী বাঈর স্বদেশনিষ্ঠা, চিত্তের দৃঢ়তা প্রভৃতি গুণসন্দর্শনে আমেরিকার এপিস্কোপেলিয়ান-সম্প্রদায়-ভুক্ত এক পাদরি তাঁহার শিষ্যদিগকে বলিয়াছিলেন যে, “মিসেস্‌ জোশী যেদিন আমেরিকায় প্রথম পদার্পণ করেন, সেদিন যেমন ছিলেন, অদ্যাপি অবিকল সেইরূপই আছেন। তাঁহার আচার-ব্যবহারে অণুমাত্র পরিবর্ত্তন ঘটে নাই। কিন্তু তিনি যদি এইরূপ অবিকৃত অবস্থায় স্বদেশে ফিরিয়া যাইতে পারেন, তাহা হইলে, তাহা আমাদিগের ও খৃষ্টধর্ম্মের পক্ষে ঘোরতর লজ্জার বিষয় হইবে!”

 আমেরিকায় সংবাদপত্রের রিপোর্টারেরা আনন্দী বাঈকে নিতান্ত ব্যতিব্যস্ত করিয়া তুলিয়াছিলেন। তিনি কোনও স্থানে গমন করিলেই তাঁহারা তাঁহার অনুসরণ করিতেন। অনেকেই তাঁহার সহিত সাক্ষাৎ করিয়া নানা বিষয়ে প্রশ্ন করিতেন। কিন্তু আনন্দী বাঈর যশোলিপ্সা বলবতী না থাকায় তিনি সংক্ষেপে কথোপকথন-পূর্ব্বক তাহাদিগকে বিদায় করিতেন। সময়ে সময়ে এই রিপোর্টারেরা তাঁহার সম্বন্ধে এরূপ অদ্ভুত বিবরণ প্রকাশ করিতেন যে তাহা পাঠ করিয়া হাস্যসংবরণ করা দুষ্কর হইয়া উঠে। সারাটোগা নামক স্থানের এক সংবাদ পত্রে একবার তাঁহার সম্বন্ধে এইরূপ সংবাদ প্রকাশিত হয়—“একটি হিন্দুমহিলা উৎস দেখিবার জন্য এদেশে আসিয়াছেন; তিনি প্রত্যেক ঝরণায় এত অধিক জলপান করিয়াছেন যে, তাহার অসুখ হইয়াছে এবং