পাতা:আনন্দী বাঈ - সখারাম গণেশ দেউস্কর.pdf/৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮২
আনন্দী বাঈ

চারিদিকে প্রচারিত হওয়ায় নানা স্থানের লোকে সভাসমিতি করিয়া তাঁহাকে অভিনন্দনপত্র-প্রেরণে সম্মানিত করিতে লাগিলেন। অনেকে তারযোগেও আনন্দ প্রকাশ করিলেন। সংবাদপত্রের স্তম্ভসমূহ তাঁহার যশোগানে পরিপূর্ণ হইল।

 কিন্তু যাঁহার জন্য এত আনন্দ-প্রকাশ, তিনি রোগের আক্রমণে দিন দিন ক্লিষ্ট হইতে লাগিলেন। একে একে বোম্বাইয়ের অনেক ডাক্তারই তাঁহার চিকিৎসা করিলেন। কয়েকবার স্থান-পরিবর্ত্তনও করা হইল। কিন্তু কিছুতেই দুষ্ট ব্যাধির উপশম হইল না। পরিশেষে আনন্দী বাঈ পুণায় আসিলেন। সেখানকার জলবায়ুর গুণে ও আত্মীয়-স্বজনের সহবাসে প্রথম কয়েকদিন তাঁহার সামান্য স্বাস্থ্যোন্নতি ঘটিল। তাঁহার জননী ভগিনী প্রভৃতি স্বজনেরা তাঁহার সাক্ষাৎকার-লাভ ও সেবার জন্য পুণায় আসিয়াছিলেন। কিন্তু গোপাল রাওয়ের ন্যায় কেহই তাঁহার সেবা শুশ্রূষা করিতে পারেন নাই। সেই সময়ে গোপাল রাও যেরূপ যত্ন ও পরিশ্রম-সহকারে আনন্দী বাঈর শুশ্রূষা করিয়াছিলেন, অনেক জননীও বোধ হয় সন্তানের সেবায় সেরূপ যত্ন-প্রকাশ করিতে পারেন না। তিনি এক মুহূর্ত্তের জন্যও আনন্দী বাঈর নিকট হইতে দূরে থাকিতেন না। সহধর্মিণীর শয্যাপার্শ্বে বসিয়া তিনি অধিকাংশ রজনীই বিনিদ্রনয়নে অতিবাহিত করিতেন। দুর্ভাগ্যক্রমে তাঁহার এই পরিশ্রমের কোনও সার্থকতা হইল না; আনন্দী বাঈ দুরন্ত ব্যাধির পীড়নে ক্ষীণ হইতে ক্ষীণতর হইতে লাগিলেন। অনেক প্রকার ডাক্তারী ও কবিরাজী চিকিৎসা হইল।