পাতা:আনন্দী বাঈ - সখারাম গণেশ দেউস্কর.pdf/৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষষ্ঠ অধ্যায়
৮৩

কিন্তু কোনও ঔষধে স্থায়ী উপকার হইল না। গোপাল রাও একেশ্বরবাদী হইলেও এসময়ে আনন্দী বাঈর জন্য ব্রাহ্মণের দ্বারা স্বস্ত্যয়ন, শান্তি, শিব-পূজা প্রভৃতি দৈব উপায়ের অবলম্বনেও বিরত হইলেন না।

 আনন্দী বাঈর অসুস্থতার বার্তা অবগত হইয়া প্রত্যহ বহুসংখ্যক ব্যক্তি তাঁহার সহিত সাক্ষাৎ করিতে আসিতেন। সংবাদ পত্রে তাঁহার শারীরিক অবস্থার সংবাদ প্রায় প্রত্যহই প্রকাশিত হইত। শ্রীযুক্ত বাল গঙ্গাধর তিলক মহোদয় এই দুঃসময়ে আনন্দী বাঈর চিকিৎসাদির জন্য স্বীয় শক্তির অধিক অর্থ সাহায্য করিয়াছিলেন।

 বহুদিন বিদেশে থাকায় স্বদেশীয় অন্নব্যঞ্জনাদির দর্শন-লাভ আনন্দী বাঈর পক্ষে দুর্ঘট হইয়াছিল। তিনি আমেরিকায় অবস্থান-কালেই তাঁহার দেশীয় অন্নব্যঞ্জন সেবনে প্রবল স্পৃহার বিষয় তাঁহার শাশুড়ীকে একখানি পত্রে লিখিয়া জানাইয়াছিলেন। অসুস্থ হইবার পর হইতে তাঁহার সে স্পৃহা অতীব বলবতী হইয়াছিল। স্বদেশে প্রত্যাগমনের পর ডাক্তারদিগের নিষেধ-বশে ও পথ্যানুরোধে আহারাদির বিষয়ে তিনি নিতান্ত সংযত ছিলেন। কিন্তু ক্রমশঃ তাঁহার সে সংযম বিলুপ্ত হইয়া আসিতেছিল। জীবনের আশা ক্রমশঃ ক্ষীণ হওয়ায় তাঁহার জননী কয়েক দিবস তাঁহাকে মনোনীত অন্ন-ব্যঞ্জনাদি সেবন করাইলেন। গোপাল রাও বলেন, ইহাতেই আনন্দী বাঈর ব্যাধি দুরারোগ্য হইয়া উঠিল। পরিশেষে একজন কবিরাজ তাঁহাকে যে ঔষধ সেবন করিতে দেয়, তাহার পথ্যস্বরূপ জলপান নিষিদ্ধ ছিল। ঐ