পাতা:আনন্দী বাঈ - সখারাম গণেশ দেউস্কর.pdf/৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষষ্ঠ অধ্যায়
৮৫

হইতে দূরে যান নাই, অথবা চক্ষু নিমীলিত করেন নাই। কিন্তু সে দিন সে সময়ে সহসা অজ্ঞাতসারে তাঁহার নিদ্রাকর্ষণ হইল। আনন্দী বাঈর জননী কন্যার পার্শ্বে বসিয়াছিলেন। রাত্রি দশ ঘটিকার সময় তাঁহারও নেত্রদ্বয় নিদ্রাভরে অলস হইয়া আসিল। এমন সময় সহসা আনন্দী বাঈ বমি করিয়া “মা গো” শব্দে চীৎকার করিলেন। তাঁহার জননী তৎক্ষণাৎ তাঁহার নিকটবর্ত্তী হইলেন। তখন—“আমার দ্বারা যতদূর হওয়া সম্ভব, তাই আমি করিলাম!”—এই কয়টি শব্দ তাঁহার কর্ণগোচর হইল। ইহাই আনন্দী বাঈর শেষ বাক্য। জননী দেখিলেন, তাঁহার কন্যার জীবন-প্রদীপ নির্ব্বাপিত হইয়া গিয়াছে। স্ত্রী-শিক্ষার যে বিজয়পতাকা এতদিন পাশ্চাত্য জন-সমাজকেও বিস্ময়ে স্তম্ভিত করিয়া রাখিয়াছিল, তাহা এইরূপে দুরন্ত কালের নিষ্ঠুরতায় অপহৃত হইল। ভারতবাসীর আশা-বৃক্ষ মুকুলিত হইয়া ফল-দানের পূর্ব্বেই অকস্মাৎ মৃত্যুর অশনি-সম্পাতে দগ্ধ হইয়া গেল! এই দুর্ঘটনা বিজ্ঞাপন করিয়া গোপাল রাও ২৮শে ফেব্রুয়ারি শ্রীমতী কার্পেণ্টারকে যে পত্র লিখিয়াছিলেন, তাহার কিয়দংশ উদ্ধৃত করিয়া এই শোককাহিনীর উপসংহার করিলাম।

 “মাসী মা! আজ আমি আপনাকে কি বলিয়া ডাকি বুঝিতে পারিতেছি না। আজ আমার মাথায় আকাশ ভাঙ্গিয়া পড়িয়াছে। সেই সৌন্দর্য্য, ধৈর্য্য, ক্ষমা ও শান্তির নিলয়-স্বরূপিণী ডাঃ জোশী আজ কোথায়? * * * মৃত্যুর দিবসটা তাহার বেশ সুখেই গিয়াছিল, বলিয়া বোধ হয়। * * * * সাধারণতঃ সামান্য শব্দেই