পাতা:আনন্দ-তুফান - প্রিয়নাথ চক্রবর্ত্তি.pdf/১১

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।



প্রথমবারের নিবেদন।

 অধুনা আনন্দময়ীয় শরৎকালীন আগমন-সময়ে আনন্দলাভের নিমিত্ত বঙ্গসমাজে রাশি রাশি রঙ্গরসাত্মক পুস্তক পুস্তিকা প্রকাশিত ও সুলভ মূল্যে বিক্রীত হইয়া থাকে। কিন্তু ঐ সকল পুস্তক দ্বারা কেহই প্রকৃত আনন্দের আস্বাদ পাইয়া থাকেন কি না, তাহা বলিবার শক্তি নাই। আনন্দময়ীর আগমন (শারদীয় দুর্গোৎসব) আর্য্যজাতির একান্ত অভিলষণীয়; অতএব এ সময় যদি প্রকৃত-আনন্দ-উদ্দীপক কোন রস পাওয়া যায়, তবে তাহা আনন্দাকাঙ্ক্ষী ব্যক্তির আদরণীয় হইবার সম্ভাবনা। এই ভরসায়, নশ্বর লৌকিকরঙ্গ-রসাত্মক-বিষয় পরিহারপূর্ব্বক, সঙ্কীর্ণ চিন্তা দ্বারা অন্তর্জগতের যতদূর সন্ধান পাওয়া সম্ভব, তদনুসারে শৃঙ্খলাবদ্ধ করিয়া আন্তরিক উপচারে আনন্দময়ীর পূজোপাসনার অভিপ্রায়ে এই ‘আনন্দ-তুফান’ রচিত হইল। ইহা দ্বারা কেহ কিছু ‘আনন্দ’ পাইবেন কি না, তাহা ক্রিয়াশীল পরীক্ষকের পরীক্ষার, এবং আদ্যা শক্তি আনন্দময়ীর ইচ্ছার উপরেই সম্পূর্ণ নির্ভর করিতেছে। তবে ইহা যদি আর্য্য-নাম ও মনুষ্য-শরীর ধারী ব্যক্তির অন্ততঃ একবার পাঠযোগ্য হয়, তাহা হইলেও কামনার আংশিক পূরণ হইবে।

 এস্থলে পাঠকবর্গকে বিনীতভাবে জানান যাইতেছে যে, এই ‘আনন্দ-তুফানের’ অধিকাংশই অমিত্রাক্ষর ছন্দে সম্বদ্ধ হইয়াছে। কিন্তু ইহা লোকান্তরিত শ্রীযুক্ত মাইকেল মধুসূদন দত্ত মহাশয়ের অনুকরণে প্রত্যেক পংক্তি চতুর্দ্দশ অক্ষরে সংযত হয় নাই। কারণ, সুমধুর অমিত্রাক্ষর ছন্দকে নিয়মিত চতুর্দ্দশ অক্ষর দ্বারা গ্রথিত করিতে হইলে, উহাকে ‘মুক্তিল’ (মুক্তা বর্ষণ করিল)