পাতা:আফগানিস্থান ভ্রমণ.djvu/১০৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

কাবুলে শীতের সকাল

 সকালবেলা হতেই তুষারপাত শুরু হয়েছে। সারাদিন ঘরে বসেই কাটাতে হ’ল। তুষারপাতকে উপেক্ষা করেই জন কয়েক হিন্দু এবং মুসলমান আমার সংগে সাক্ষাৎ করতে এলেন। ভ্রমণ-কাহিনী শোনার জন্য আসেন নি, তাঁরা এসেছিলেন আসামাই মন্দিরে ঘোল ঢালতে এবং আমার নিকট থেকে বসন্ত রোগে আক্রান্ত রোগীদের জন্য কবচ নিতে। আগন্তুকদের ধারণা, আসামাই মন্দিরের কোনও বিশিষ্ট স্থানে ঘোল ঢাললেই বসন্ত রোগের হাত হতে রোগী বেঁচে যাবে। তাদের আরও ধারণা ছিল, যারা দেশ ভ্রমণ করে তারা কবচ তাবিজ দিয়ে থাকে। এদের ভুল বিশ্বাস ভাংতে গিয়ে আমাকে বড় রকমের একটা চোট সামলাতে হ'ল। পূজারী আমাকে বললেন, “আপনি দেখছি এখানে বসেই মন্দিরের অবমাননা করতে শুরু করেছেন। আসামাই জাগ্রত গংগা। শ্রীকৃষ্ণ এই গংগাজলকেই কলিযুগে মুক্তির হেতু বলে গিয়েছেন। এখানে ঘোল ঢেলে কত বসন্ত রোগী নিরাময় হয়েছে তার হিসাব রাখেন? আপনি হয়তো কবচ দেবার শক্তি অর্জন করেন নি, কিন্তু যারা কবচে বিশ্বাস করে তাদের বিভ্রান্ত করা আপনার পক্ষে অন্যায় এবং এরূপ করলে এখানে আপনি থাকতে পারবেন না।” আমি চুপ করে থেকে পুঁজিবাদী পরিচালিত অর্থনীতির কথা ভাবতেছিলাম এবং সুযোগ পেলে আজই এখান হতে সরে পড়ব, এটাও মনে ছিল।

 বেলা তখন চারটা। আকাশ পরিষ্কার। প্রবল হাওয়া বইছিল। এসময়ে পথে কেউ বের হয় না, তবুও বের হলাম। শেষে প্রধান মন্ত্রীর বাড়ির সদর দরজায় উপস্থিত হলাম। দরজায় দুটি তুর্কীস্থানের পাঠান পাহারা দিচ্ছিল। এদের প্রতি হৃক্ষেপ না করে সদর দরজা পেরিয়ে গেলাম। মনে মনে শোলাহেটটিকে ধন্যবাদ দিলাম। কোনও এক সময়ে ইউরোপীয়ানরা বোখারায় শোলা