পাতা:আফগানিস্থান ভ্রমণ.djvu/১২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আফগানিস্থান ভ্রমণ
১১৫

স্বাধীন আফগানদের বৃটিশ সরকার তাদের পূর্ব অধিকার থেকে বঞ্চিত করে নি। আইন-কানুনের মানে কি? স্বাধীন মানুষ ইসরাতেই সব বুঝতে সক্ষম হয়।

 নানারূপ সংবাদ জানিবার চেষ্টায় যখন আমি ব্যস্ত ছিলাম তখন একদিন হিন্দু-প্রতিনিধি আমাকে তাঁর বাড়ীতে চা পানের নিমন্ত্রণ করেন। তাঁর নিমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান না করে, বরং সাদরেই গ্রহণ করেছিলাম। জানতাম হিন্দু-প্রতিনিধি নিশ্চয়ই আমার কোন সাহায্য চাইবেন, অনিষ্ট করবার ক্ষমতা আর তাঁর নাই। তার বাড়ীতে গিয়ে দেখলাম স্থানীয় চিফ জাষ্টিস্ও তথায় নিমন্বিত। আইনের সর্বময় কর্তাটি ধর্মে হিন্দু কিন্তু জাতিতে পাঠান। তাঁকে সনাতনী বলেই মনে হয়েছিল। কারণ তিনিও বিধবাবিবাহের সমর্থক ছিলেন না।

 কাবুল শহরে থাকার সময় ধর্ম সম্পর্কে কয়েক দিন আলোচনা করেই বুঝেছিলাম এটাও দ্বিতীয় নেপাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। ধর্মের সপক্ষে কথা বলতে পার যত ইচ্ছা, কিন্তু ধর্মের বিপক্ষে বলবার, এমন কি ধর্মে যদি কোন গলদ থাকে তবে তাও নির্দেশ করবার অধিকার নাই। সরকারী আইন ধর্মের বিরুদ্ধে কোন কথা শুনতে রাজি নয়। সেজন্য আমাকে শুধু শুনে যেতেই হ’ত। যখনই কিছু নিয়ে প্রতিবাদ করতে হ’ত তখনই বক্তব্য বিষয়ের সমর্থনের জন্য শাস্ত্র হতে শ্লোক উদ্ধত না করলে চলত না। শাস্ত্রে আমার পাণ্ডিত্য ছিল না, কাজেই আমার চুপ করে থাকা ছাড়া উপায়ও ছিল না।

 আইনের মালিক চিফ জাস্টিস এবং হিন্দুপ্রতিনিধি উভয়েই বৃদ্ধ এবং উভয়েই যুবতীভার্যার পাণিগ্রহণ করেছেন। চিফ জাস্টিস্ মহাশয় বাচ্চা-ই-সাত্তোর রাজত্বকালে দেশ হতে পালিয়ে যান এবং ইরান দেশে আশ্রয় গ্রহণ করেন। ইরানীরা তাঁর প্রতি সদয় ব্যবহার করত যদি তিনি প্রথমেই হিন্দু বলে পরিচয় দিতেন, কিন্তু তিনি তা করেন নি। পরিচয় দান-প্রসংগে নিজের গোষ্টির কথা মুখ দিয়ে বেরিয়ে পড়ে। তাঁর গোষ্টির লোক এককালে ইরানীদের শাসক ছিল। তারপর যখন দেখলেন ইরানীরা তাঁর প্রতি ভাল ব্যবহার করছে না, তখন