পাতা:আফগানিস্থান ভ্রমণ.djvu/১৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২২
আফগানিস্থান ভ্রমণ

আমীর হবিবুল্লার সাক্ষাৎ ভাই। বোধহয় অর্থাৎ কেহ কেহ মনে করেন নাসেরউল্লা এই হত্যাকার্যে পরোক্ষ সমর্থক ছিলেন।

 প্রশ্ন জাগে কেন রাজাকে হত্যা করে রাজভ্রাতাকে রাজ্য দেওয়া হবে। উত্তরে বলা যেতে পারে আফগানিস্থানে অনেক ভারতীয় বিপ্লবী আশ্রয় নিয়েছিলেন এবং তাঁরা মনে করেছিলেন যে কোনও প্রকারে যদি আফগানিস্থানে কিছু ঘটাতে পারা যায় তবে ভারতেও বিপ্লবের প্রভাব বৃদ্ধি হবে। মোল্লা শ্রেণীর লোক কিন্তু হবিবুল্লার হত্যার জন্য একটুও উস্কানি দেয় নি, সেজন্য আফগানিস্থানের মোল্লাশ্রেণীকে বৃটিশের স্পাই বলতেও অনেকে কসুর করত না।

 হবিবুল্লাকে হত্যা করার পর নাসেরউল্লারই রাজা হবার কথা ছিল কিন্তু আমানউল্লা পিতৃ-সিংহাসন পরিত্যাগ না করে নিজেই সিংহাসন দখল করেন। সেইজন্য অনেকে মনে করেন আমানউল্লাও তার পিতৃহত্যাতে সংযুক্ত ছিলেন। এই প্রকারের ধারণা স্বদেশী এবং বিদেশী কয়েকজনের ধারণা মাত্র। কাবুলের হিন্দুরা এই ধারণাকে একটুও বিশ্বাস করতেন না এবং যখনই হাবিবউল্লার মৃত্যুর কারণ অন্বেষণ করতে কেহ চেষ্টা করছেন সব সময়ই আমানউল্লাকে বাদ দিয়ে কথা বলেছেন।

 যখন হাবিবুল্লা নিহত হন তখন আমানউল্লা সহরের বাইরে শিকারে গিয়েছিলেন। আরও একদল লোকের মুখে শুনেছি হবিবুল্লার মৃত্যুর জন্য আমানউল্লাও অনেকটা দায়ী। কারণ তখন দেশের মধ্যে বৃটিশের বিরুদ্ধে যারা যুদ্ধ করতে চাইছিল হাবিবুল্লা তাদের কঠোর হস্তে দমন করেছিলেন, আমানউল্লা সেই দমনকার্যের পক্ষপাতী ছিলেন না। শুধু তাই নয় হিজ্ হাইনেস্ দি আমীর অফ্ আফগানিস্থান বেশ ভালভাবে বুঝতে পেরেছিলেন যে বিপ্লবের পেছনে মোল্লাইজম নাই সেই বিপ্লব বড়ই মারাত্মক এবং তাকে দমন করা অতীব কঠিন কাজ।