পাতা:আফগানিস্থান ভ্রমণ.djvu/১৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

কাবুল হতে বিদায়

 কাবুলে যা দেখবার সবই দেখেছিলাম, যা শুনবার শুনেছিলাম, এবার আমার প্রবল বাসনা হল কাবুল ত্যাগ করবার। কাবুল হতে গজনি পর্যন্ত ভূমি পর্বতময় ত বটেই, উপরন্তু বরফ পড়ে পথ অনেকস্থানেই বন্ধ ছিল। মাত্র ডাক চলাচলের সুবিধা ছিল; তাই প্রধান মন্ত্রীকে বলে ডাকের মোটরেই কান্দাহার যাবার বন্দোবস্ত করেছিলাম। অতি অল্প পরিশ্রমেই কাবুল পরিত্যাগের বন্দোবস্ত হয়েছিল।

 এক সুন্দর প্রভাতে বহু প্রত্যাশিত কাবুল শহরকে বিদ্যায় অভিবাদন জানিয়ে আবার নতুন পথে যাত্রা করলাম। যে মোটরে রওনা হয়েছিল তার নাম হল “মটরে পোস্ত”। শহর হতে বের হয়েই বুঝতে পারলাম তখন কাবুল পরিত্যাগ করা আমার পক্ষে অন্যায় হয়েছে। যে দিকেই দৃষ্টি যায়, সে দিকই বরফে সাদা হয়ে ছিল। সোঁ সোঁ করে প্রবল বাতাস বইছিল। আমার যত শীতবস্ত্র ছিল সব কটাই শরীরে জড়িয়েও শীতে থর থর করে কাঁপতে ছিলাম। তবুও কাবুলে ফিরে যেতে আর মোটেই ইচ্ছা হচ্ছিল না।

 পার্বত্যপথে মোটর অতি কষ্টেই চলছিল। অনেকবার পিছলপথের বাইরে মটর চলে যাচ্ছিল এবং চাকা বরফে ডেবে যাচ্ছিল। সুখের বিষয় আমাদের সংগে শাবল ও কোদাল ছিল। প্রত্যেকটা চাকাও চেন জড়ান ছিল। এতেও যখন মাঝে মাঝে মোটর পিছলে রাস্তার বাইরে চলে যাচ্ছিল তখন চেন না থাকলে আমাদের কি অবস্থা হ’ত তা সহজেই অনুমেয়। পথে কয়েকটি হিন্দু বস্তি পড়ছিল। ড্রাইভারের প্রতি সরকারী আদেশ ছিল, পথের মাঝে, যে কোন হিন্দু বস্তি পড়বে সে আমাকে যেন তা দেখিয়ে যায়।

 প্রথমদিন বিকালবেলা আমরা একটি হিন্দু বস্তিতে পৌঁছলাম। এই বস্তির লোকজনদের দেখে, আমার মনে হল না যে এরা হিন্দু এমন কি পাঠান।