পাতা:আফগানিস্থান ভ্রমণ.djvu/৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

কাবুলের পথে

 পরদিন প্রাতে স্থানীয় হিন্দুদের সংগে দেখা করতে গিয়েছিলাম। আমার সংগে একজন পাঠানও ছিলেন। পূর্বেই বলেছি, হিন্দুরা চার শ্রেণীতে বিভক্ত। আর্যসমাজীরা বলে “নমস্তে” সনাতনীরা বলে “জয় ধরম কি, জয় গোপালজী কি” শিখরা বলে “সৎ-শ্রী-আকাল”। নানকপন্থীরা সবই বলে। এর মানে হ’ল নানকপন্থীরা সুবিধাবাদী। যে যে-কথায় খুশী হয় তাকে সেই ধর্মেরই প্রচলিত অভিবাদন-শব্দ দ্বারা সন্তুষ্ট করে। আমি এত জটিলতায় না গিয়ে শুধু নমস্কারই বলতাম। কিন্তু এতে একমাত্র আর্যসমাজী ছাড়া আর সবাই আমার ওপর বিরূপ হয়ে উঠল; এমন কি আমাকে কিছুমাত্র ভদ্রতা দেখাতেও তারা কুষ্ঠিত হয়ে উঠল। আমি কিন্তু এদের দ্বারে ভিক্ষা করতে যাই নি, গিয়েছিলাম সংবাদ সংগ্রহ করতে। তাই একজনকে বললাম, “তোমাদের কাছে আমি ভিক্ষা চাইতে আসি নি, তোমাদের অবস্থা দেখতে এসেছি মাত্র। আমার সংগে কথা বললে তোমরাই উপকৃত হবে।”

 আমার কথা শুনে কএক জন হিন্দু এমন ভাব দেখাতে লাগল যে, তারা যেন হতভম্ভ হয়ে গিয়েছে। আসল কথা হল, এরা বুঝতে পেরেছিল আমি সত্যিই ভিখারি নই, চাইতে আসি নি বরং দিতে এসেছি। নিমেষে তাদের আচরণের পরিবর্তন হল এবং শুরু হল আদর-আপ্যায়ন।

 আমি হিন্দুদের বললাম, এখন স্থির হয়ে আমার কথা শোন। তোমাদের যা’ বলবার তা এমন ভাষায় বলবে, যে ভাষা আমার সংগের পাঠানও বুঝে। তোমরা আরবী এবং ফারসী কথা বেশি ব্যবহার কর বলেই আমাকে এত কথা বলতে হল। এখন বলতো জীবন কাটছে কেমন? জবাব সেই একই ভারতীয় ধরনের—দিন কেটে যাচ্ছে কোন মতে। এদের এরূপ প্রাণহীন মামুলী কথা