পাতা:আফগানিস্থান ভ্রমণ.djvu/৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫০
আফগানিস্থান ভ্রমণ

পরিচয় দিলাম। মোল্লা আমার পিঠে হাত রেখে বললেন “বলুন তো কখনও ভূত প্রেত এবং জিন দেখেছেন কি না?” আমার হাতের ঘড়িটা বাতির কাছে নিয়ে দেখলাম তখন প্রায় পাঁচটা বেজেছে। বললাম এই দেখুন রাত আর মাত্র দেড় ঘণ্টা আছে, আজ একাকী বাইরে ছিলাম, ভূত প্রেত তো দেখিনি। লোকটি আমার কথা পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারল না। এদিকে চায়ের পেয়ালাগুলি এক এক নিশ্বাসে উজাড় করছিলাম। বয় চায়ের পেয়াল ভর্তি করে দিচ্ছিল। শেষটায় মোল্লাকে বললাম “ভূত প্রেত আমাদের পেটে থাকে; এর মানে হ’ল যখনই আমাদের পেট গরম হয় তখনই নানারূপ স্বপ্ন দেখি। গত চার বৎসর যাবত দেশ বিদেশে ঘুরছি, অনেক বনে জংগলে রাত কাটিয়েছি, কোথাও কোনদিন ভূত প্রেত দেখিনি।”

 মোল্লা জিজ্ঞাসা করলেন, ফিরিঙ্গী দাওয়াই বিশ্বাস করেন?

 বললাম “নিশ্চই”।

 মোল্লা একটা হাই তুলে বললেন “এটা, কাফেরির লক্ষণ”।

 পাশের একজন লোক প্রতিবাদ করে বললে, ফিরিঙ্গী দাওয়াই না হলে আমাদের চলে না। হেকিমি দাওয়াই তো কোন কাজেই লাগে না। ইংলিশদের সংগে যখন লড়াই হয়েছিল, তখন ফিরিঙ্গী দাওয়াই না পেলে অনেক আহত সেপাই মরে যেত।

 মোল্লা ত একদম চুপ। তাঁর দুরবস্থা দেখে আমার দুঃখ হল, তাকে বুঝিয়ে বললাম “না বুঝে কোন কিছুর বিরুদ্ধে চাটুপটু মত প্রকাশ করা আপনাদের মত শিক্ষিত লোকের পক্ষে অন্যায়। আপনারা ত চান দুনিয়ার ভাল, বিলাতী ঔষধ ব্যবহারে ক্ষতি কি?”

 মোল্লার একটু শান্তি হল। তিনি আমাকে তাঁর বাড়ীতে বিশ্রাম করার জন্য অনুরোধ করলেন, আমিও বিনা বাক্যব্যয়ে তাঁর অনুসরণ করলাম।