পাতা:আফগানিস্থান ভ্রমণ.djvu/৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আফগানিস্থান ভ্রমণ
৫১

 মোল্লার বাড়ী মসজিদ হতে সামান্য দূরে। বাড়ীতে পৌঁছে তিনি অন্দরে প্রবেশ করলেন আর আমি বাড়ীর সামনে দাঁড়িয়ে চারদিক দেখতে ছিলাম। বাড়ীটি ছোটখাট দুর্গবিশেষ। এই ধরনের বাড়ীঘর তৈরী হয় যেখানে বন্য জীবের প্রচুর অত্যাচার। আফগানিস্থানের উত্তর দিকটাতে নেকড়ে বাঘ ভয়ানক অত্যাচার করে। প্রত্যেক পাঠানের বন্দুক পিস্তল এমন কি মেশিনগান পর্যন্তু থাকে, তবুও দল বেধে যখন নেকড়ে আক্রমণ করে তখন বন্দুক-কামানে কিছুই হয় না। নেকড়ের নাগালের বাইরে চলে যেতে হয়, নতুবা রক্ষা থাকে না।

 পাঠানদের মধ্যে প্রচলিত কথা আছে, যদি বাঁচতে হয় তবে মরণের সময়ও শত্রুকে রুখতে হবে। যদি বাঁচত হয় তবে নেকড়ে বাঘের মত লড়তে হবে। মরণকে কোন মতেই ভয় করলে চলবে না। ‘‘কথাটা যখন শুনেছিলমে তখন মনে হয়েছিল নিজের দেশের কথা। আমাদের প্রাণের মায়া অপরিসীম, আমরা মরতে জানি না, বাঁচতেও জানি না। আমরা আমাদের ভবিষ্যত ঈশ্বরের ওপর ছেড়ে দিই। পাঠানরা আল্লাকে মানে, আল্লার নামে ভয়ও পায়, কিন্তু তা বলে নিজের দেশকে, নিজের মা-বোনকে রক্ষা করার সময় আল্লার ওপর সব ছেড়ে দেয় না। তারা বিপদের সময় “পয়মাল” স্বভাব প্রাপ্ত হয় এবং প্রাণও দেয় বীরের মত। একজন পাঠানকে বলেছিলাম মরণের সংগে পয়মালের উপমা দেওয়াটা উচিত হয় নি। পাঠান তেড়ে বললে” যখন মরতে যাব তখন যদি অন্য ভাব থাকে তবে পরাজয় অনিবার্য। শূকর যখন আক্রমণ করে তখন মরণের ভয় রাখে না। এসব কথা শোভা পায় তাদেরই যারা যে কোন মুহুর্তে মরণকে আমন্ত্রণ করতে পারে।

 দাঁড়িয়ে পূর্বস্মৃতি জাগিয়ে তুলছিলাম আর দেখছিলাম মোল্লার বাড়িটা। আধঘণ্টার মাঝেই মোল্লা ফিরে এলেন এবং আমাকে বাড়ির ভেতর নিয়ে গেলেন। বাড়িতে অনেকগুলি ঘর। সামনের দিকের একটি ঘরে আমরা প্রবেশ করলাম। মোল্লা আমাকে সুসজ্জিত এক বিছানা দেখিয়ে বললেন, এতে