পাতা:আফগানিস্থান ভ্রমণ.djvu/৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৪
আফগানিস্থান ভ্রমণ

 সে মাথা নত করে বললে, শেষের দিনে যেন ঈশ্বর এই পবিত্র ইসলাম আত্মার সদগতি করেন।

 —বুঝেছি হে, আমি এখানে যদি মারি তবে আমার আত্মার জন্য সেরূপ প্রার্থনা করবে না, যেহেতু আমি ইসলাম ধর্মের লোক নই।

 সে একটু হেসে বললে, “আমাদের দেশের লোকের ধারণা কিরূপ তা বুঝাবার জন্যই এরূপ বললাম, এসব কথা মনে রাখবেন না। এগিয়ে চলুন, আজ আমাদের একটা ছোট গ্রামে পৌছানার কথা আছে, সেখানে আপনি যেমন লেকচার দেবেন আমিও তেমনি লেকচার দেব।”

 পাহাড়ের গায়ে গ্রাম। গ্রামটি ছোট হলেও বেশ পরিষ্কার। আমরা কিন্তু একটা আবর্জনাপূর্ণ ঘরে প্রবেশ করলাম, যেন আমাদের দেশের একটা গোয়াল ঘর। ঘরে প্রবেশ করা মাত্র দুৰ্গন্ধ অনুভব করলাম। ঘরটা দিনের বেলাতেও অন্ধকার। এরূপ ঘরে বসতে ইচ্ছা হচ্ছিল না। শুধু ইয়াকুবের অনুরোধেই বসতে হয়েছিল। আমরা ঘরে প্রবেশ করা মাত্রই তিনটি প্রৌঢ় লোক ইয়াকুবকে ঘিরে দাঁড়াল। ইয়াকুব প্রত্যেকের সংগে করমর্দন করল, আলিংগন করল না। আমিও করমর্দন করলাম। একটি লোক ঘরে আগুন জ্বালাল এবং আমাদের বসবার জন্য কারপেট দেখিয়ে দিল। আমরা তাতেই বসলাম। অল্প সময়েই চা তৈরি হল। আমাদের চা খেতে দিয়ে তিনটি লোকই কিসের জন্য গ্রামে গেল সেটা কিছুই বুঝলাম না।

 অনেকক্ষণ কথা বলে বুঝলাম, প্রগতিশীল যুবকগণ করমর্দনই করে, অলিংগন করে না এবং যদি কেউ পূর্বপ্রথাকে সম্মান দেখাতে বলে তবে তারা বিনা তর্কে এমনই একটা ভংগি করে যে কেউ আর তাদের আলিংগনের জন্য অনুরোধ করবে না।

 আফগান জাত নানা সম্প্রদায়ে বিভক্ত তা পূর্বেই বলেছি। ইয়াকুব সেই শ্রেণীগুলি ডিংগিয়ে আর এক স্তরে উঠেছিল। তার নাকে নভিক ছাপ রয়েছে,