পাতা:আফগানিস্থান ভ্রমণ.djvu/৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আফগানিস্থান ভ্রমণ
৮১

কমে গিয়েছিল। তাঁরা বলছিলেন জাপানী টিপ্ বাতি বিক্রয় করার জন্য এখানে এসে তাঁরা ফ্যাসাদে পড়েছেন। বৈষ্ণবধর্মের অনুশাসন অনুসারে শব্জী-ভোজীদের বন্দুক দেখাই অন্যায়, সুতরাং বন্দুক ক্রয়বিক্রয়ের কথা উচ্চারণ করলে বোধ হয় তাঁদের বৈষ্ণবী আর্ম-এক্টে পড়ে অনন্ত কালের জন্য নরকগামী হতে হবে। এসব বিপদে ফের পা দিতে তাঁরা নারাজ। সেজন্য প্রস্তাব করলেন, যদি আমার সুযোগ এবং সুবিধা হয় তবে আমায় দ্বারাই টিপ্ বাতির কারবারটি এ যাত্রার মত সেরে নিয়ে চিরতরে তাঁরা কাবুল শহরকে নমস্কার জানিয়ে বিদায় নেবেন। তাঁদের ক্লীবসুলভ দীন ভাব দেখে আমার দয়া হল। বললাম কাল সকালে এসেই তাঁদের কাজ যাতে কালই শেষ হয় তার বন্দোবস্ত করব। পর দিন তাঁদের কাজ করে দিয়েছিলাম এবং সেই কাজের মজুরী স্বরূপ তারা আমাকে কাবুল হোটেলেই মুরগীর মাংস এবং পোলাও খাইয়ে দিয়েছিলেন। তাঁরা কোনরূপে মাংস দিয়ে আমাকে ভোজন করাতে রাজি ছিলেন না। আমিও শাকসব্জী দিয়ে উদর পূর্তি করতে নারাজ ছিলাম। দায়ে পড়লে অনেকেই ইচ্ছার বিরুদ্ধে অনেক কাজ করতে বাধ্য হয়। শাক-ভোজী মহাশয়দের কন্যাদায় ছিল না, ছিল ব্যাবসাদায়। তা হতে এ যাত্রার মত আমার সাহায্যে রক্ষা পাওয়ায় মাংস দিয়ে ভোজন করাতে বাধ্য হয়েছিলেন।

 এদের কাজকর্ম সম্পন্ন করে দিয়ে পরের দিন বেলা তিনটার সময় প্রধান মন্ত্রীর বাড়ির দিকে রওনা হলাম। অবশ্য এর পূর্বে চায়ের দোকানে পূর্বপরিচিত বয়ের কাছ হতে প্রধান মন্ত্রীর বাড়ির অনেক কথাই জেনে নিয়েছিলাম।

 পথের উপর বরফ জমে পাথর হয়ে রয়েছিল। ঠাণ্ডা বাতাস প্রবল বেগে বইছিল। পথে গরিব লোক ছাড়া আর কেউ চলছিল না। দু’পাশের বাড়ির দরজাগুলি বন্ধ ছিল। নীরবে পথ চলছিলাম। প্রধান মন্ত্রী আমার সংগে কথা বলবেন কি না, সে কথা ভাবছিলাম না। অনেক বড় লোকই সময়ের অভাবে কথা বলেন নি, এখনও অনেকে দেখা করতে গেলে প্রথমেই ভাবেন হয়তো ভিক্ষা