পাতা:আমাদের জাতীয়ভাব - রজনীকান্ত গুপ্ত.pdf/২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

[ ২৫ ]

প্রীতিতে সম্বন্ধ হইয়া, স্বদেশের মুহ্যমান হৃদয়ে তাড়িতবেগ সঞ্চারিত করুন, এবং স্বদেশের শিল্পবিজ্ঞানের উৎকর্ষসাধন পূর্ব্বক পরমুখপ্রেক্ষিতারূপ অপার কলঙ্কের মোচনে বদ্ধপরিকর হউন। হীন বংশ হইতে আমাদের উদ্ভব হয় নাই। আমাদের পিতৃপুরুষগণ যে সভ্যতালোক প্রসারিত করিয়াছিলেন, তাহাতেই এখন জগৎ আলোকিত হইয়াছে। অধ্যাপক সীলি, তাঁহার একখানি গ্রন্থে লিখিয়াছেনঃ—“যখন মহাবীর শেকন্দর শাহ অপেক্ষাকৃত অনুন্নত প্রাচ্যদেশে আধিপত্য স্থাপন করিয়া, গ্রীসের সভ্যতা ও জ্ঞানের পরিচয় দেন, তখন সেই সকল জনপদের অধিবাসীরা, ভক্তি ও প্রীতির সহিত গ্রীসের ঐ সভ্যতার সমাদর করিয়াছিল। রোম যখন গলের উপর সভ্যতালোক প্রসারিত করে, তখন গলের অধিবাসীরা উহার উজ্জ্বল ভাবে মোহিত হইয়া, বিজেতার প্রতি কৃতজ্ঞতাপ্রকাশ করিয়াছিল। যে হেতু, রোমের ঐ আলোক তাহাদের হৃদয়কে আলোকিত করিয়া, জীবনের মহাব্রতসাধনে নিয়োজিত রাখিয়াছিল। কিন্তু, ভারতে ইঙ্গলণ্ডের আধিপত্যবিস্তারে, ভারতবর্ষীয় হিন্দুর হৃদয়ে, ঐরূপ কোনও ভাবের উৎপত্তি হয় নাই। অতি প্রাচীনকালে ভারতে জ্ঞানালোক প্রসারিত হইয়াছিল। ভারতে প্রাচীন সভ্যতা ছিল। অনন্ত রত্নের ভাণ্ডার, অনুপম মহাকাব্য ছিল। জ্ঞানগরিমার ভিত্তি, দর্শনশাস্ত্রাদি ছিল। ঐ জ্ঞানালোকই এক সময়ে ধীরে ধীরে প্রতীচ্য ভূখণ্ডের একাংশ আলোকিত করিয়াছিল। আমরা ভারতে যে আলোক সমর্পণ করিয়াছি, তাহা প্রকৃত ও উজ্জ্বল হইলেও, হিন্দুর অধিকতর হৃদয়াকর্ষক ও অধিকতর কৃতজ্ঞতার উদ্দীপক হয় নাই। * * আমরা হিন্দুর অপেক্ষা বুদ্ধিমান্ নহি। আমাদের হৃদয়, হিন্দুর হৃদয় অপেক্ষা অধিকতর প্রশস্ত বা অধিকতর উন্নত নহে। আমরা অজ্ঞাত ও অচিন্ত্যপূর্ব্ব বিষয় সম্মুখে রাখিয়া, অসভ্যদিগকে যেরূপ বিস্ময়াবিষ্ট করিতে