পাতা:আমার কথা (প্রথম খণ্ড) - বিনোদিনী দাসী.pdf/১৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার কথা!
১০৫

আসে। যে রমণী স্নেহময়ী জননী, তাহারাও সেই রমণীর জাতি! যে রমণী জ্বলন্ত অনলে পতি সনে হাসিমুখে পুড়িয়া মরে, আমরাও সেই একই নারী-জাতি! তবে গোড়া হইতে পাষাণে পড়িয়া আছাড়্ পিছাড়্ খাইতে খাইতে একেবারে চুম্বক ঘর্ষিত লৌহ যেরূপ স্বর্ণ হয়, আমরাও সেইরূপ পাষাণে ঘর্ষিত হইয়া পাষাণ হইয়া যাই! আরও একটা কথা বলি সকলেই সমান নহে; যে জীবন অজ্ঞানতা অন্ধকারে আচ্ছন্ন করিয়া আছে, তাহা এক রকম নির্জীব ভাবে জড় পদার্থের মত চলিয়া যায়! কিন্তু যে জীবন দূরে দূরে উজ্জ্বল আলোক দৃষ্টি করিতেছে অথচ পতিত হইয়া আত্মীয়, সমাজ, স্বজন-বন্ধন হইতে বঞ্চিত তাহাদের জীবন যে কত দূর দুঃখময়, তাহা যে কত দূর কষ্টকর, যন্ত্রণাদায়ক তাহা ভুক্তভোগী ব্যতীত কেহই অনুভব করিতে পারিবে না। বারাঙ্গনা জীবন কলঙ্কিত ঘৃণিত বটে? কিন্তু সে কলঙ্কিত ঘৃণিত কোথা হইতে হয়? জননী জঠর হইতে তো একবারে ঘৃণিতা হয় নাই? জন্ম মৃত্যু যদি ঈশ্বরাধীন হয়, তবে তাহাদের জন্মের জন্য তত তাহারা দোষী হইতে পারে না? ভাবিতে হয় এ জীবন প্রথম ঘৃণিত করিল কে? হইতে পারে কেহ কেহ স্বেচ্ছায় অন্ধকারে ডুবিয়া নরকের পথ পরিকার করে? কিন্তু আবার অনেকেই পুরুষের ছলনায় ভুলিয়া তাহাদের বিশ্বাস করিয়া চির কলঙ্কের বোঝা