পাতা:আমার জীবন.djvu/৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমার জীবন ૨છે. ছিল, তখন সে লোকও ছিল না ; ঘরের মধ্যে আমি একমাত্র হইলাম। আমি ব্যাকুলচিত্তে ঐ সকল কাজের তরঙ্গ দেখিতে লাগিলাম, আর ভাবিতে লাগিলাম । আমা হইতে এত কাজ হওয়ার কোন মতেই সম্ভাবনা নাই । আমি মনে মনে এই চিন্তাটি অধিক করিতে লাগিলাম । হে দীননাথ । আমার শক্তিতে যে এসকল কাজ সুসম্পন্ন হয়, এমন ভরসাও করি না । তবে যদি হয়, সে তোমার নিজ গুণে, তুমি যা কর তাই হবে । আমি এই প্রকার পরমেশ্বরকে স্মরণ করিয়া ঐ সমুদয় কাজ করিতে আরম্ভ করিলাম । ক্রেমে ক্রমে ঐ সকল কাজ আমার পক্ষে ঈশ্বরেচ্ছায় এমন সহজ হইল যে, আমি একাই ফুবেল পাক করিতে পারগ হইলাম, এবং সমুদয় কাজ করিয়া বসিয়া থাকিতাম । তখন মেয়েছেলের লেখাপড় শিখিত না, সংসারে খাওয়াদাওয়ার কর্ম সারিয়া যে কিঞ্চিং অবকাশ থাকিত, তখন কর্তা বাক্তি যিনি থাকিতেন তাহার নিকট অতিশয় নম্রভাবে দণ্ডায়মান থাকিতে হইত। যেন মেয়েছেলের গৃহকর্মে বৈ আর কোন কর্মই নাই। তথনকার লাকের মনের ভাব এইরূপ ছিল । বিশেষতঃ তখন মেয়েছেলের এই প্রকার নিয়ম ছিল, যে বেী হইবে, সে হাতখানেক ঘোমটা দিয়া ঘরের মধ্যে কাজ করিবে, আর কাহারও সঙ্গে কথা কহিবে না, তাহ হইলেই বড় ভাল বে। হইল । সেকালে এখনকার মত চিকণ কাপড় ছিল না, মোটা মোট কাপড় ছিল । আমি সেই কাপড় পরিয়া বুক পর্যন্ত ঘোমটা দিয়া ঐ সকল কাজ করিতাম। আর যে সকল লোক ছিল, কাহারও সঙ্গেই কথা কহিতাম না । সে-কাপড়ের মধ্য হইতে বাহিরে দৃষ্টি হইত না যেন কলুর বলদের মত দুইটি চক্ষু ঢাকা থাকিত। আপনার পায়ের পাতা ভিন্ন অন্ত কোন দিকে দৃষ্টি চলিত না । এই প্রকার সকল বিষয়ে বৌদিগের কর্মের রীতি ছিল। আমি ঐ রীতিমতেই চলিতাম ।