পাতা:আমার জীবন.djvu/৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমার জীবন "קט আমাকে হুঃথের সাগরে ভাসিতে হইত। অতএব তোমাকে শত শত ধন্যবাদ ! হে দীননাথ ! একটি সন্তান পালন করিতে মায়ের যে কত প্রকার যাতন। আর কত কষ্ট সহ্য করিতে হয়, তাহ তোমার প্রসাদে আমি বিলক্ষণ জানিয়াছি । ছেলের জন্ত মায়ের যে এত যন্ত্রণ ভোগ করতে হয়, ইহা আমি পূর্বে জানিতাম না । নিজের উপরে চাপ না পড়িলে লোকে বিশেষ মতে জানিতে পারে না । ফলতঃ সস্তানের জন্ম মায়ের যে কত দূর পর্যন্ত যন্ত্রণ। ভোগ করিতে হয়, সেটি আমি বিলক্ষণ বুঝিতে পারিয়াছি । মনুষ্য মাত্রেরই এ বিষয় ভালমতে জানা আবশ্যক । প্রায় লোকে এ সকল বিষয় জ্ঞাত নহেন । এমন যে স্নেহময়ী আমার মা, আমি তাহার সেবা করি নাই, এই কথাটি আমার মনে ভারী আক্ষেপের বিষয় হইয়া রহিয়াছে ! জননী যে এমন তুর্লভ বস্তু, আমি তাহ জানিয়াও জানতে পারিলাম না । আমার জন্য আমার মার এত কষ্ট হইয়াছিল ! আমি মারের কোন কৰ্মে লাগি নাই । আমা হইতে আমার মায়ের কিছু উপকারই হয় নাই । আমার মা আমাকে দেখিবার জন্য কত রোদন করিতেন এবং আমাকে লইয়া যাইবার জন্যই বা কত যত্ন করিতেন । আমি এখানে আসিয়া অবধি দায়মালা কারাগারে বন্দী হইয়াছি । এই সংসারের কাজ চলিৰে ন৷ বলিয়। প্রাণান্তেও আমাকে পাঠান হইত না । তবে যদি কোন ক্রিয় উপলক্ষে আমার যাওয়া হইত, কিন্তু কয়েদী আসামীর মত দুই চারিদিন মধ্যে আমাকে ফিরিয়া আসিতে হইত। আমার সঙ্গে দশ পনর জন লোক, দুই জন সরদার, দুই জন দাসী এক নৌকার সহিত বসিয়া থাকিত । আমি যে করারে যাইতাম, ঐ করার মতেই আসিতে হইত। ক্রিয়া-কলাপ ভিন্ন আমার যাওয়া কোনমতেই ঘটিত না। আমার মা মৃত্যুকালে আমাকে দেখিবার জন্ত কত প্রকার খেদ করিয়াছিলেন । আহা ! আমি মাকে দেখিবার জন্য কত প্রকারে চেষ্টা পাইয়াছিলাম, কিন্তু আমার দুরপৃষ্টহেতু কোনক্রমেই যাওয়া ঘটিয়া উঠে নাই । এটি কি আমার সাধারণ আক্ষেপের বিষয় । হা বিধাতঃ । তুমি কেনই বা আমাকে মানবকুলে সৃষ্টি করিয়াছিলে ?