পাতা:আমার জীবন.djvu/৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 e আমার জীবন সত্ত্বরূপে অহরহ, সর্বস্থলে তুমি রহ, এই মনে ভরসা আমার । দিয়াছি চরণে ভার, কর বা ন কর পীর, জানা যাবে মহিমা তোমার ॥ তখন ঐ সংসারসমুদ্রে কাজে মগ্ন থাকাতে আমার দিবারাত্র কি প্রকার অবস্থায় গত হইয়াছে, তাহা আমি কিছুমাত্র জানিতে পারি নাই । অনস্তর আমার মনের বাসন প্রবল হইয়া উঠিল যে, আমি একান্ত লেখাপড়া শিখিয়া পুথি পড়িব। তখন আমি মনে মনে মনের উপর রাগ করিতে লাগিলাম। কি জ্বালা হইল, কোন মেয়ে লেখাপড়া শিখে না, আমি কেমন করিয়া লেখাপড়া শিখিব, একি দায় উপস্থিত হইল। আমি কি করিব ভাবিতে লাগিলাম । তখন আমাদিগের দেশের সকল আচার-ব্যবহারই বড় মন্দ ছিল না, কিন্তু এই বিষয়টি ভারি মন্দ ছিল । সকলেই মেয়েছেলেকে বিদ্যায় বঞ্চিত করিয়া রাখিয়াছিলেন । তখনকার মেয়েছেলেগুলা নিতান্ত হতভাগা, প্রকৃত পশুর মধ্যে গণনা করিতে হইবেক । এ বিষয়ে অন্যের প্রতি অনুযোগ করা নিরর্থক, আমাদের নিজের অদৃষ্ট ক্রমেই এ প্রকার দুর্দশা ঘটিয়াছে। বাস্তবিক মেয়েছেলের হাতে কাগজ দেখিলে সেটি ভারি বিরুদ্ধ কর্ম জ্ঞান করিয়া, বৃদ্ধা ঠাকুরাণীরা অতিশয় অসন্তোষ প্রকাশ করিতেন, অতএব আমি কেমন করিয়া লেখাপড় শিখিব । আমার মনও তাহ মানে না, লেখাপড়া শিখিব বলিয়া সতত ব্যাকুল থাকে । আমি মনে মনে ভাবিতে লাগিলাম, যখন আমি ছেলেবেলায় স্কুলে বসিয়া থাকিতাম, তখন যত ছাত্র লেখাপড়া করিত, আমি তো তাহা শুনিতে শুনিতে কতক কতক মনে মনে শিখিয়াছিলাম, তাহার কিছুই কি আমার স্মরণ নাই ? এই প্রকার ভাবিতে ভাবিতে ঐ চৌত্রিশ অক্ষর, ফল বানান সহিত আমার মনে হইল। তাহাও কেবল পড়িতে পারি, লিখিতে পারি না । কি করিব, ভাবিতে লাগিলাম । বস্ততঃ একজন না শিখাইলে, কেহ লেখাপড়া শিখিতে পারে না । বিশেষতঃ আমি মেয়ে, তাহাতে আবার বউ মানুষ,