পাতা:আমার জীবন.djvu/৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমার জীবন এবং এই লেখাপড়া শিখিবার জন্য আমাদের কষ্ট হইয়াছে । আমি যে যৎকিঞ্চিৎ শিখিয়াছি, সে কেবল সম্পূর্ণ পরমেশ্বরের অনুগ্রহে মাত্র। আমি যে লোকের অধীনী হইয়া একাল পর্যন্ত দিবস গত করিয়াছি বাস্তবিক তিনি বেশ লোক ছিলেন । কিন্তু দেশাচার ত্যাগ করা ভারি কঠিন ব্যাপার। এ জন্মই আমার এ প্রকার দুর্দশা ঘটিয়াছিল। সে যাহা হউক, গতকর্মের আর শোচনা কি ? সেকালে মেয়েছেলের বিদ্যাশিক্ষণ ভারি মন্দ কর্ম বলিয়া লোকের মনে বিশ্বাস ছিল । তখনকার কেন, এখনও কতক লোক এরূপ দেখা যায়, যেন বিদ্যা তাহাদিগের শত্রু । লেখাপড়ার নাম শুনিয়া অমনি জ্বলিয়া উঠে । তাহাদের বলিলে কি হইবে । সময় অমূল্য ধন, সে কাল আর এই কাল, দুই সময়ের তুলনা করিয়া দেখিলে, তদপেক্ষা এখন যে কত পরিবর্তন হইয়াছে তাহার সংখ্যা নাই । সকল বিষয় এখন যে প্রকার হইয়াছে, সে কালের লোক এখন দেখিলে তাহাদের আর বাঁচিতে হইত না , দুঃখে আর ঘৃনাতেই মরিত । বস্তুতঃ পরমেশ্বর যখন যেরূপ আচার-ব্যবহার নির্দেশ করিতেছেন, তখন তাহা উত্তম বলিয়া বোধ হয় । সেকালের লোকের সেই মোটা মোটা কাপড়, ভারী ভারী গহনা, হাতপোরা শাঁখা, কপালভরা সিঁদুর বড় বেশ দেখাইত । আমাদের সকল পরিচ্ছদ যদিও সে প্রকার ছিল না, তথাপি যাহা ছিল তাহাই মনে হইলে ঘুণ বোধ হয় । যাহা হউক, পরমেশ্বর আমাকে এত দিবস অতি যত্নে রাখিয়াছিলেন, আমি বড় সন্তুষ্ট মনে এতকাল যাপন করিয়াছি । এখন আর অধিক বলিব কি, পরমেশ্বর যা করেন সেই ভাল । আমি যে ছেলেবেলায় স্কুলে বসিয়া থাকিতাম, তাহাতে আমার অনেক উপকার হইয়াছে। আমি সেই পুস্তকের পাতাটি ও ঐ তালের পাতাটি লইয়া মনের অক্ষরের সঙ্গে মিলাইয়া মিলাইয়া দেখিতাম । আমি এই প্রকার করিয়া সকল দিবস মনে মনে পড়িতাম। আমি অনেক দিবসে, অনেক পরিশ্রমে, অনেক যত্নে এবং অনেক কষ্ট করিয়া ঐ চৈতন্যভাগবত পুস্তকখানি গোঙাইয়া গোঙাইয়া পড়িতে শিখিলাম। সেকালে