পাতা:আমার জীবন.djvu/৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SÞ আমার জীবন দিবস কিছুই জানি না । এই বলিয়া তাহারা দুই ভগিনীতে আমার নিকটে লেখাপড় শিথিত আরম্ভ করিলেন । আমার সেই দুটি ননদ অল্প দিন লেখাপড়া করিয়াই ক্ষান্ত দিলেন, শিখিতে পারিলেন না । তখন ঐ পুস্তক পড়ার জন্য আমার সেই ননদের আমাকে বিশেষ যত্ব করিতেন। সেই অবধি আমি আর গোপনে পুৰি পড়িতাম না । আমার ননদদিগের সম্মুখে সদর হইয়া পুথি পড়িতে লাগিলাম । তখন আমার মনে আনন্দের আর সীমা থাকিল না । আহা কি আহলাদের বিষয় ! আমার বহু দিবসের বাঞ্ছা জগদীশ্বর পূর্ণ করিলেন । আমি প্রতিবাসিনী সমজুটিদের সঙ্গে কথন কথন গোপনে গোপনে গান e করিতাম। সংসারের কাজ আমার নিকট তৃণবৎ বোধ হইও । আমি মনের আনন্দেই প্রায় সকল দিবস থাকিতাম। এই সকল আহলাদে আমার মন সততই মগ্ন থাকিত । বিষয়ের দুঃখের ধার বড় ধারিতাম না | পরমেশ্বরের ইচ্ছায় প্রেমানন্দেই পরিতুষ্ট ছিলাম । স্পষ্টই দেথা যাইতেছে যে, সংসারের বিষয়ে অনেক লোকেরি প্রায় দুঃখের ভার বহন করিতে হয়, কিন্তু আমার যদিও কোন বিষয়ে কষ্ট ছিল না, তথাপি অনেক যন্ত্রণ। আমার অন্তরে বাহিরে বিলক্ষণ লাগিয়া রহিয়াছিল । হে জগদীশ্বর ! এমন যে দুঃসহ যন্ত্রণ। পুত্রশোক ইহা যেন আর মন্ত্রন্থের হয় না। আমার দশটি পুত্র, তুইটি কন্থণ । এই বারটি সন্তান হইয়াছিল । তাহার মধ্যে যে কয়েকটি সন্তানের মৃত্যু হইয়াছিল, তাহা আমি বিশেষ করিয়া বলি । মধ্যম পুত্র পুলিনবিহারীর অন্নপ্রাশনের সময় মৃত্যু হয় । পরে প্যারীলাল নামক আর একটি পুত্র একুশ বৎসরের হইয়াছিল । সে ছেলেটি বহরমপুর কলেজে পড়িত। সেই বহরমপুর জেলাতেই তাহার মৃত্যু হয় । রাধানাথ নামে একটি পুত্র ১৩ বৎসর বয়ঃক্রমে মৃত্যুগ্রাসে পতিত হয় । আর একটি পুত্রের ৩ বৎসরের সময়েই মৃত্যু হয়, তাহার নাম চন্দ্রনাথ । কনিষ্ঠ পুত্রটির ৪ বৎসরের সমরে মৃত্যু হয়, তাহার নাম মুকুন্দলাল । আমার বড় কন্যাটির ১৭ বৎসর বয়সে একটি পুত্রসস্তান জন্মে, ১৩ দিবস পরে স্মৃতিক ঘরেই তাহার মৃত্যু হয়। ঐ স্মৃতিক ঘরেই তাহার