পাতা:আমার জীবন.djvu/৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমার জীবন ᏫᏱ কাজে কাজেই আপনার হাতে খাওয়া হইল না, অন্য এক জনের সাহায্যে খাইতে হইল। বস্তুতঃ যখন আমাদের নিজের ইচ্ছা মতে আমরা আহারও করিতে পারি না, তখন পরমেশ্বর ভিন্ন আমাদের কোন কাজ নির্বাহ হইতে পারে না । তবে কেন আমাদের মনে এত গৌরব ! অতএব পরমেশ্বর ভিন্ন আর সকলি মিথ্যা । তবে লোকে কেন বলে আমার শরীর, আমার বাটী, আমার ঘর। ফলতঃ আমার আমার সকলই মিথ্যা ; মন্ত্রন্থের মনের ভ্রম আর যায় না । একথা ক্ষান্ত থাকুক, এখন যাহা বলিতেছি তাহাই বলি । পুত্রশোক প্রবল যন্ত্রণ। যদিও আমার অস্তরে দিবারাত্র ধক্ ধর্ব্ব করিয়া জ্বলিতেছে, তথাপি এককালে পতিত করিতে পারে নাই । আমার বুদ্ধির চালনাশক্তি না হইতেই আমার মা আমাকে মহামন্ত্র দয়াময় নামটি বলিয়া দিয়াছেন । সেই মহৌষধ আমার অস্থি ভেদী হইয়া রহিয়াছে। আমার শরীর মন যখন বিষয়ের হলাহলে এককালে আচ্ছন্ন ও অবশ হইয়া পড়ে, তখন আমার সেই অস্থিভেদী বিশল্যকরণী প্রবল হইয়া আমার শরীরের সমুদয় ব্যাধি শান্তি করিয়া, আনন্দ-রসে মনকে পরিতোষ করে । তখন এ সকল বিষ-জ্বালা আমার মনে আর প্রবেশ করিতে পারে না । ঐ সমুদয় রিপু এককালে পরাস্ত হইয়। আমার মন হইতে বহিস্কৃত হইয়া পলায়ন করে । বিশল্যকরণীর এত গুণ যে হৃদয়ে প্রবেশ মাত্রই বিপক্ষ পরাস্ত হইয়া যায় । আহা ! এমন মহারত্ব বিশল্যকরণী, যাহার স্রাণে শরীর ও মনের কুপ্রবৃত্তিরূপ বিষজ্বালা সমুদয় জীর্ণ হইয়া অমৃত স্রোতে শরীর মন এককালে পরিপূর্ণ হয়। হায় হায় ! এই মহৌষধ না চিনিয়া লোকে নানাপ্রকার যন্ত্রণানলে দগ্ধ হয় । আহ একি সাধারণ আক্ষেপের বিষয় । আমরা যে চক্ষু থাকিতেই অন্ধ হইয়াছি, তাহার আর সন্দেহ নাই । লোকে বিবেচনা করে যে, গন্ধমাদন পর্বতে বিশল্যকরণী আছে, সে স্থানে যাওয়া অতি কঠিন কর্ম, আমাদের সাধ্য নাই, আমরা সে বিশল্যকরণী কোথায় পাইব । আহা ! কি আশ্চর্য ; আমাদিগের মনের কি এত ভ্রম । সেই ঔষধের বীজ যে আমাদিগের চিত্তক্ষেত্রে রোপিত হইয়াছে