পাতা:আমার জীবন.djvu/৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

( ♔ ) দাড়ি আছে।” এই বিষয়টির মীমাংসার জন্ত মাতৃসকাশে উপস্থিত হইলে মাতা হাসিয়া রাসম্বন্দরীকে বলিলেন—“তোমার ছোটভাই যে সকল কথা বুঝে, তোমার বুদ্ধি নাই, তুমি কিছুই বুঝ না।” এই সময়ে বালিকা মাতার নিকট পরমেশ্বর কিরূপে সাহায্য করেন, তাহার কথা শুনিয়াছিলেন, সেই কথায় তfহার যে বিশ্বাস হইয়াছিল, তাঁহাই তাহার ভাবী জীবনকে সম্পূর্ণভাবে আয়ত্ত ও নিয়মিত করিয়াছিল। মা তাঁহাকে বলিয়াছিলেন, “দয়ামাধব তোমাদের কান্না শুনিয়া ঐ মামুন পাঠাইয়া দিয়া তোমাদিগকে বাটতে আনিয়াছেন।” নিজের নিবুদ্ধিতার কথা তিনি আরও অনেক স্থলে সরলভাবে কহিয়া গিয়াছেন—“যখন আট নয় বৎসরের ছিলাম, তখন আমাকে কত লোক পরিহাস করিয়া বলিত, তোমার মায়ের বিবাহ হয় নাই। আমার বুদ্ধি এমনই ছিল, আমি সেই কথায় বিশ্বাস করিতাম। পরে যখন আমার পচিশ বৎসর বয়ঃক্রম তখনই সেই বুদ্ধির শিকড় কিছু কিছু ছিল।” তাহার শ্বশুর বাড়ীতে একটা ঘোড়া ছিল তাহার নাম জয়হরি। একদিবস আমার বড় ছেলেটিকে ঘোড়ার উপর চড়াইয়া বাটার মধ্যে আমাকে দেখাইতে আনিল। তখন সকল লোকে বলিল, এ ঘোঁড়াটি কর্তার ; তখন আমাকে সকলে বলিতে লাগিল, দেখ, দেখ, ছেলে কেমন করিয়া ঘোড়ায় চড়িয়া আসিয়াছে দেখ । আমি ঘরে থাকিয়া জানিলাম ওটা কর্তার ঘোড়া, সুতরাং মনে মনে ভাবিতে লাগিলাম যে, কর্তার ঘোড়ার সম্মুখে আমি কেমন করিয়া যাই, ঘোড়া যদি আমাকে দেখে—তবে বড় লজ্জার কথা।” দ্বাদশ বর্ষ বয়সে রাসমুন্দরীর বিবাহ হয়, তখনও তিনি বিবাহ কি ভাল জানিতেন না । তিনি বড়ই সোহাগে পালিত । একদিন শুনিলেন র্তাহার জননী তাহাকে অপরের হস্তে দিবেন। বালিকার বড় অভিমান হইল,—এই কথা বড় দুঃসহ হইল । তিনি মাকে যাইয়া বলিলেন, “মা আমাকে যদি কেহ চাহে, তবে কি তুমি আমাকে দেবে ? মা বলিলেন, “ষাট তোমাকে কাহাকে দিব, এ কথা তোমাকে কে বলিয়াছে।” কিন্তু বিবাহের আয়োজন হইল, বালিকা বেশ স্কৃতি বোধ করিল। হলুধ্বনি, বাজনা, হলুদমাখা, এ সকল আনন্দের মধ্যে যে তাঁহাকে চিরদিনের জন্ত মাতার ক্রেীড় হইতে কড়িয়া লইবার ব্যবস্থা হইতেছে, তাহা সে জানিত না। বিবাহন্তে বরপক্ষ বাড়ীতে ফিরিয়া যাইবে, খুব ধুমধাম পড়িয়া গেছে—“তখন আমি ভাবিলাম, ঐ যাহারা আসিয়াছিল, এখন বুঝি তাহারাই বাইজেছ। এই ভাবিয়া আমি অতিশয় আঙ্কতি হইবা মায়ের সঙ্গে