পাতা:আমার বাল্যকথা ও আমার বোম্বাই প্রবাস.pdf/১৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ ৪৬ আমার বোম্বাই প্রবাস বিজাপুর আমি যখন সোলাপুরে জজ ছিলাম তখন বিজাপুর আমার অধীনে ছিল, ইহাদের কলেক্টর আলাদা কিন্তু একই জজ। ষোড়শ ও সপ্তদশ শতাব্দীর অগ্র পশ্চাৎ প্রায় দুই শত বৎসর বিজাপুর দক্ষিণাত্যের অধীশ্বর ও অদিলসাহী বাদস্যদের রাজধানীরূপে প্রখ্যাত ছিল। এই সহর সোলাপুবের ৬০ মাইল দক্ষিণ সীমা ও কৃষ্ণ নদীর অধিত্যকায় অবস্থাপিত। ইহা দক্ষিণাত্যের পূর্ব দক্ষিণ রেলওয়েব একটি নামাঙ্কিত ষ্টেসন। ইহার আশপাশে প্রকৃতির শোভা সৌন্দর্য্য বিশেষ কিছু নাই। বৃক্ষপল্লব পরিবর্জিত তরঙ্গীয়মান মাঠ ময়দান—মধ্যে মধ্যে ছোট ছোট শস্তক্ষেত্র এই যা প্রকৃতির মুখচ্ছবি । রেলগাড়ীতে যাইতে যাইতে দূর হইতে বিজাপুবের দূতস্বরূপ “গোল-গুম্বজ” ইমারতথানি পথিকের নয়ন আকর্ষণ করে-ত্রুমে তাহার বিবৃদ্ধ আকার দক্ষিণ আকাশ ব্যাপিয়া দৃগুপটে উদ্ভাসিত হয়। পরে সহরের যত নিকটবর্ত্তী হওয়া যায়, ততই গোর মসজিদ ও অন্যান্ত ছোট বড় ইমারতের ভগ্নমূর্ত্তি সকল নেত্র পথে পতিত হয়। সহরের চতুর্দিকে প্রস্তর প্রাচীর, ইহার পরিধি অনুনি তিন ক্রোশব্যাপী । এই প্রাচীর গভীর পরিখায় পরিবেষ্টিত ও অল্পাধিক বলশালী শতাধিক বুরুজে সুরক্ষিত । পঞ্চতোরণের মধ্য দিয়া সহরে প্রবেশ করা যায়। তাহার চারিটি অক্ষত রছিয়াছে ; পঞ্চমদ্বার সরকারী ঘরবাড়ীতে বন্ধ হইয়া গিয়ছে। যে দিক্ দিয়া প্রবেশ কর সহরের এক সুমহান অপূর্ব্ব দৃপ্ত আবিষ্কৃত হয়। বীজাপুরের প্রাচীর বুরুজ ইমারতের ভগ্নাবশেষ দুঃে ইহা এক সুবিস্তীর্ণ জনাকীর্ণ নগর বলিয়া ভ্রান্তি জন্মে। ভিতরে প্রবেশ করিলে সে ভ্রম দুব হয়। সহরে বসতিগুলি কেমন খাপছাড়া এবং গুটিকত প্রাচীন ইমারত ছাড়িয়া দিলে তাহাতে বাড়ী ঘর ছয়ার বিশেষ কিছুষ্ট বর্ণনীয় নাই। প্রাচীন ও নব্য সহরে আকাশ পাতাল প্রভেদ । আধুনিক লোকালয় পশ্চিমদারের সন্নিহিত। তাহ। ছাড়াইয় গেলে অন্তরের ভগ্ন বিজনত স্পষ্ট ফুটিয়া উঠিয় চিত্তকে ঘনবিষাদে পূর্ণ করে। নগরের মধ্যভাগে দোধারী বৃক্ষশ্রেণীর মধ্য দিয়া যে রাজপথ গিয়াছে তাহ পথিককে মধ্যদুর্গে লইয়া যায়। এই দুর্গের নাম ‘আর্ক কেল্লা । ইহা গোলাকৃতি, ইহার বেষ্টন প্রায় এক মাইল হইবে । “আর্ক কেল্লয়’ যত বড় বড় সাহেব সুবার বাসগৃহ, গবর্ণমেন্টের কার্য্যালয় প্রভৃতি সার্ব্বজনিক ইমারতশ্রেণী। কেল্লার মধ্যগত সাত মজলী প্রাসাদ, ‘আনন্দ মহল, "গগন মহল’—বাহিরে আসার মহল’, ‘মালক জহান, মসজিদ এবং আলি আদিলসার অসম্পূর্ণ সমাধি মন্দির মিলিয়া যে সৌধমালা উন্মেষিত হয় তাহ। বিজাপুরের প্রাচীন কীর্ত্তিস্কৃতিতে পূর্ণ। এই পূর্ব্বগৌরবের কঙ্কাল সকল সহরময় বিক্ষিপ্ত