পাতা:আমার বাল্যকথা ও আমার বোম্বাই প্রবাস.pdf/১৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমার বোম্বাই প্রবাস 8 দেখা যায়। কোথাও বা বনজঙ্গল পবিবৃত ছাদহীন ভগ্নগৃহ, কোথাও একটি গোর কিংবা মসজিদ ঝোপঝাপের মধ্য হইতে উকি দিতেছে, কোথাও বা ভগ্ন স্তপের মধ্যে ফোয়ার ও জলযন্ত্রসংযুক্ত মনোহর উদ্যানেব চিহ্ন সকল পড়িয়া আছে। কোথাও ভগ্ন জলযন্ত্র শুষ্ক, ফল-ফুলের বৃক্ষ সকল বনজঙ্গলে সমাচ্ছন্ন, কোনস্থানে হয়ত একটি অযত্নসভূত জুইলতা ভগ্ন প্রাচীর বাহিয়া উঠিয়াছে। হয়, সেই ভুবনবিখ্যাত বিজাপুরের এই তুর্দশ — যদুপতে: ক গতা মথুরাপুৰী রঘুপতেঃ ক গতোত্তরকোশলা ইতি বিচিন্ত্য কুরু স্বমনঃ স্থিরং ন সদিদং জগদিত্যবধারয় । কোথা মথুরাপুরী গেছে যদুপতির। রঘুপতির কোশলাও সেই পথে । সবে এতেক ভাবি মন করহ স্থির জেনে কিছুষ্ট স্থির নহে এ জগতে ॥ উপরে আর্ক কেল্লার নামোল্লেখ করিয়াছি। আর্ক কেল্লাই বিজাপুরের শোভনতম স্থান, ইমারতরাজির রত্নভাণ্ডার। য়ুসফ আদিল সা প্রথম সুলতান এই দুর্গ নির্ম্মাণ আরম্ভ করেন, ইব্রাহিম আদিল সা’র আমলে ইহার কার্য্য শেষ হয় ; ইহার প্রত্যেক গৃহ, প্রত্যেক ভূমিখণ্ড প্রাচীন বীজাপুরের সহস্ৰ স্মৃতিতে পরিপূর্ণ। এই দুর্গ আদিলসাহী বাদসাদিগের কত লীলাপেল, যুদ্ধবিগ্রহের স্থান-ইহাই আবার সেই রাজবংশ নিপাতের সাক্ষী। বিজাপুর পতনকালে এই স্থানে সুলতান সেকন্দর সহস্ৰ সহস্র প্রজার হৃদয়ভেদী আর্ত্তনাদের মধ্যে বিজয়ী ঔরঙ্গজীবের চরণে স্বীয় রাজমুকুট সমর্পণ করেন। যদিও ইহার সোধাবলী ভগ্নপ্রায়, ইহার উদ্যান কানন তৃণ কণ্টকাৰ্বত, ইহার উৎস জলপ্রণালী সকল শুষ্ক—তথাপি ইহা এক অনির্ব্বচনীয় মহিমামণ্ডিত, সেই সমুদ্ধত রাজবংশের কীর্ত্তিস্তম্ভরূপে বিরাজমান। L বিজাপুরে যে সমস্ত প্রাচীন ইমারতের ভগ্নাবশেষ বিশ্বমান তন্মধ্যে “গোলগুম্বজ” সর্ব্বগ্রগণ্য। ইহা সুলতান মাহমুদের সমাধি মন্দির। সহরের মধ্যে ইহা অদ্বিতীয়, পৃথিবীতেও একটি ভিন্ন এমন বিশাল গুম্বজ আর নাই। গুম্বজরাজ বহির্ভাগ হইতে ১৯৮ ফুট উচ্চ ও যে চতুষ্কোণ প্রাকারের উপর স্থাপিত তাহার প্রত্যেক পাশ্ব ১৩৫