পাতা:আমার বাল্যকথা ও আমার বোম্বাই প্রবাস.pdf/১৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমার বোম্বাই প্রবাস X & S. সুকল ঘরের প্রাচীর ও ছাদ বিচিত্র লতাপাত ও মানুষের ছবিতে চিত্রিত। শেষ প্রকোষ্ঠে প্রাচীরের গায়ে মাহমুদ বাদশার ছবি মোগল সম্রাটের বর্বর হস্তে পড়িয়া নষ্ট হইয়াছে। আরো অনেকগুলি চিত্র কালের দংশনে বিবর্ণ ও বিলুপ্তপ্রায় হইয়া গিয়াছে। পূর্ব্বে বলা হইয়াছে যে, আর্ক কেল্লা ইমারতরাজির রত্নভাণ্ডার । এই কেল্লায় যে সকল বিশাল সুন্দর ইমাবত একত্রীকৃত তাহার একভাগ চীন মহল। চীন মহলের সৌধমালা জজের আদালত, কলেক্টর মাজিষ্ট্রেটের কাছারীতে পরিণত হইয়াছে। এই মহলের এক কোণে এক সরোববতীরে সপ্ত তল প্রাসাদ ( সাতমজলী ) গগনভেদ করিয়া উঠিয়াছে। “গগন মহল” রাজাদের দরবারশাল । তাহার সম্মুখে যে বিশাল খিলানদ্বাৰ (arch ) মুখবাদান করিয়া আছে তাহ বিজাপুরের সর্ব্বোৎকৃষ্ট পিলান। উদ্যানসংযুক্ত সুসজ্জিত “আনন্দ মহল” রাজাদের বিহারভবন ছিল । ইহা এক প্রকাগু তৃতলগুহ । রাণীদের বায়ু সেবনের জন্য উপরে প্রশস্ত ছাদ –ছাদের উপর হইতে অদৃষ্ঠভাবে বাহিরের তামাস দেখিবার সুবিধা । এই গৃহে কত সিড়ি, খুপরি খুপবি ঘর তাহার অন্ত নাই –বোধ হয় যেন ইহা রাজারাণী মিলিয়া লুকাচুরি খেলিবার জন্ত নির্ম্মিত । বিজাপুরে এইরূপ যে কত অট্টালিকা, কত কত গোর, গুম্বজ মসজিদের ধ্বংসাবশেষ রহিয়াছে তাহার ইয়ন্ত নাই। তাহদের সবিস্তার বর্ণন করিতে গেলে পুথি বাড়িয়া যায়, অতএব এইখানে শেষ করি। যাহা কিছু বলা হইয়াছে তাহাতে যদি কাহারে। কৌতুহল উদ্দীপন হইয়া থাকে তাহা হইলে তিনি একবার বিজাপুরে গিয়া চক্ষুকর্ণের বিবাদভঞ্জন করিয়া আসুন, এই আমার অনুরোধ। পুরাতন বিজাপুরের কথায় আমরা যেন নিজ সহবটুকু বিজাপুর বলিয়া কল্পনা না করি। সহর অপেক্ষ সহরতলি ভারি, সহরের শাখা প্রশাখা অনেকদূর বিস্তৃত ছিল। আর আমরা যে লক্ষ লক্ষ লোকের বসতির বিবরণ শুনিতে পাই, সে সহর সহরতলি সবটা ধরিয়া। বিজাপুরের প্রান্তবর্ত্তী জোরাপুর, ইব্রাহিমপুর, নেীরসপুর, সাহাপুর ইত্যাদি পুররাজির মধ্যে সাহাপুরই প্রধান । এই সাহাপুর বিজাপুর মিলিয়া স্থান জুড়িয়া যে প্রদেশ তাহাই সাধারণভাবে বিজাপুব সংজ্ঞায় অভিহিত । ইহার মধ্যে প্রায় দশ লক্ষ লোকের বসতি ছিল । সাহাপুরের অন্তর্গত আফজুলপুর সুবিখ্যাত আফজুল খার বাসস্থান ছিল—সেই আফজুল খাঁ যিনি রাজা শিবাজীকে মারিতে গিয়া নিজে মরিলেন। গ্রামের কিয়দ রে নবাব পরিবারের কতকগুলি গোর দেখা যায়, তৎসম্বন্ধে এক লোমহর্ষণ গল্প আছে। গোরগুলি সকলি স্ত্রীলোকের গোর । এক লাইনে সাতটি গোর, এমন এগারো লাইন। সকলেরই আকার প্রকার প্রায় সমান। গল্পটা এই যে আফজুল যখন শিবাজীর