পাতা:আমার বাল্যকথা ও আমার বোম্বাই প্রবাস.pdf/২৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমার বোম্বাই প্রবাস ➢ ፃ © করসনদাস মূলজী বল্লভধর্ম্মের এই অনীতিদুর্গ ভেদ করিতে গুজরাট হইতে এক ধর্ম্মবীর অভূদিত হইলেন–র্তাহার নাম করসনদাস মূলঙ্গী। এই মহাত্মার জীবন-কাহিনী এইস্থলে সংক্ষেপে বলা আবশ্যক। ইনি ১৮৩২ অব্দে বৈষ্ণবকুলে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবে ইহার মাতৃবিয়োগ হয়—পিত দ্বিতীয়বার বিবাহ করিয়া আপন ভ্রাতার পরিবারে বালকটিকে সঁপিয়া দেন। করসনদাস বোম্বায়ে এলফিনিষ্টন বিদ্যালয়ে শিক্ষালাভ করেন। তাহার বুদ্ধির বিকাশের সঙ্গে সঙ্গেই সমাজ-সংস্কার-সমস্তার প্রতি র্তাহার মনোযোগ আকৃষ্ট হয় । ঘটনাক্রমে এই সমাজ-সমস্ত র্তাহার জীবন-সমস্ত হইয়া দাড়াইল । যখন তাহার বয়স একুশ বৎসর, বিধবা বিবাহের উপর একটা পারিতোষিক প্রবন্ধের বিজ্ঞাপন দেখিয়া তিনি লিখিতে আরম্ভ করেন, তাহার লেখার কিয়দংশ কে একজন দুষ্ট লোক চুরি করিয়া তাহার কাকিমার হাতে আনিয়া দেয়—র্তাহার এই লঘুপাপে গুরুদণ্ড হইল। অভিভাবকের কোপানলে পড়িয় তাহার সমূহ বিপদ উপস্থিত। র্তাহার লেখাপড় বন্ধ হইল, তিনি গৃহ হইতে বহিষ্কৃত হইয়। পথের ভিখারী হইয়া দাড়াইলেন । অন্ত কেহ হইলে এই প্রচণ্ড আঘাতে এখানে থামিয়া যাইত, নিজস্ব মতামত একদিকে রাখিয় তাহার অন্নদাতার মন যোগাইয়া চলিতে একটুও ইতস্ততঃ করিত না, কিন্তু করসনদাস তেমন পাত্র ছিলেন না—ঘ খাইয় তাহার মনের আগুন দ্বিগুণ জলিয়া উঠিল । ভাগ্যক্রমে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ যোগাড় করিয়া লইয়। তিনি এ যাত্র। রক্ষা পাইলেন। র্তাহার অন্নচিন্ত৷ দূর হইল এবং সমাজ-সংস্কার-সমস্য পূরণেরও অবকাশ পাইলেন । তখনকার কালে • বোম্বায়ে দেশীয় সংবাদপত্রের অবস্থা সন্তোষজনক ছিল না । তাহাদের লিখিত প্রবন্ধ সকল যেমন সারহীন, ভাষাও তেমনি অশোভন ও দোষাশ্রিত। পারসীদের মধ্যে গুজরাটী ইংরাজী মিশ্রিত একপ্রকার খিচুড়ী ভাষা প্রচলিত ছিল। এই অভাব মোচন করিবার জন্ত কয়েকজন কৃতবিদ্য পারসী “রাস্তগোপ্তার” নামক এক সাপ্তাহিক গুজরাটী পত্র বাহির করেন। করসনদাস তাহার লেখকের মধ্যে একজন ছিলেন কিন্তু তাহাতে র্তাহার মর্ম্মকথা সকল প্রচার করিবার যথেষ্ট প্রসার না পাওয়াতে “সত্য-প্রকাশ” নামে তিনি নিজে একখানি সাপ্তাহিক পত্র প্রকাশ করিলেন – তখন হইতে সমাজ-সংস্কার সম্বন্ধে তাহার লেখনী চালনা করিবার সুযোগ পাইলেন। হিন্দু সমাজের ক্ষতস্থান সকল উদঘাটন করা ; মহারাজদের অনীতিগর্ভ অমানুষী কাণ্ড সকল লোকমাঝে রাষ্ট্র করিয়া দেওয়া, এই তাহার ব্রত ; এই কঠোর ব্রত ধারণ করিয়া "সত্য-প্রকাশ”