পাতা:আমার বাল্যকথা ও আমার বোম্বাই প্রবাস.pdf/২৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

<е о আমার বোম্বাই প্রবাস বিরুদ্ধে, কখন মোগল-সম্রাটের তাধীনে বিজাপুরের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ করিয়া নিজকার্য্য । সাধিয়া লতেন। অবশেষে যখন নিজের বল বুঝিলেন—যখন দেখিলেন “পাহাড়ে আগুন লাগিয়াছে” ( ডেঙ্গিরাস্লাবিলে দিবা ) সকল প্রস্তুত –তখন মুখোষ ফেলিয়া দিয়া নিজমূর্ত্তি ধারণ করিলেন । আফজুল খ ক্রমে শিবাজীর দৌরাত্মা অসহ্য হইয়া উঠিল, বিজাপুর-সুলতান আর ধৈর্য্য রাখিতে পারিলেন না । শিবাজীকে দমন না করিলে সে সর্ব্বদমন হইয়া উঠিবে এইরূপ চিহ্ন দেখিয়া সুলতান শিবাজীর বিরুদ্ধে সৈন্ত প্রেরণ করিলেন । সেনাপতি আফজুল খ কোমর বাধিয়া শিবাজীকে ধরিয়া আনিতে বাহির হইলেন । সে সময়ে শিবাজী মহাবলেশ্বর হইতে অনতিদূরে প্রতাপগড়ের পাহাড়ে। সেই পাহাড়ের উপর দুর্গ নির্ম্মিত হইয়া প্রকৃতির বলের উপর কৃত্রিম বল যোজিত হইয়াছে। শিবাজী এই দুর্গে ব্যান্ত্রের ন্যায় বসিয়া শিকার নিরীক্ষণ করিতেছেন। আফজুল খাঁ তাহাকে ধরিতে আসিতেছেন। পথিমধ্যে তুলজাপুরের মন্দির আক্রমণ করিয়া হিন্দুদের যথেষ্ট অপমান করিয়াছেন। স্লেচ্ছদের উপর হিন্দুদিগের জাতিবৈর দ্বিগুণ জলিয়া উঠিয়াছে। শিবাজী চরমুখে সকল সংবাদ পাইতেছেন। আফজুল খ৷ অনেক সৈন্তসমস্তে পরিবৃত, তাহার সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে জয়লাভের সম্ভাবনা নাই, ছলে ও কৌশলে তাহাকে মারিতে হইবে। শিবাজী নবাব সাহেবের নিকট দূত পঠাইলেন এবং ভয়ের ভান করিয়া এইরূপ দেখাইতে লাগিলেন যে, তিনি নবাবের অধীনতা স্বীকার করিতে এখনি প্রস্তুত, কেবল প্রাণভয়ে ধরা দিতে নারাজ । থী সাহেব যদি প্রতাপগড়ে অধীনের সাক্ষাৎকারে সম্মত হন তাহা হইলে মুখে সকল কথা হইবে। অবশেষে তাহাই সাব্যস্ত হইল। নবাব কোন দুরভিসন্ধি মনে না আনিয়া শিবাজীর সহিত সহজভাবে সাক্ষাৎ করিতে চলিলেন – একজন মাত্র সঙ্গী, পরিচ্ছদের মধ্যে এক পাতল মসলিনের কাপড়, আর একটি সোজা তলবার—সে শুধু অলঙ্কারের জন্ত,--ব্যবহারের মানসে নয়। বেহরোগণ যথানির্দিষ্ট স্থানে পালকী নামাইল কিন্তু শিবাজী সেখানে নাই। দূর হইতে দুজন মানুষ দেখা যাইতেছে—ভয়ে ভয়ে অতি সস্তপণে তাহদের পদক্ষেপ । বাহিরে দেখিতে শিবাজী নিরস্ত্র কিন্তু ভিতরে ভিতরে তিনি ‘ভবানী তলবার ও ‘বাঘনখ’ গুপ্তাস্ত্রে সুসজ্জিত। বাহিরে সামান্ত শুভ্রবেশ কিন্তু ভিতরে তিনি লৌহবর্ম্মে আচ্ছাদিত। শিবাজী ক্রমে অগ্রসর হইলেন—খ সাহেব তাহার সঙ্গে দস্তুর মত কোলাকুলি করিতে গেলেন। কিন্তু শিবাজীর সে ভল্লুকের আলিঙ্গন–র্তাহার হস্তে