পাতা:আমার বাল্যকথা ও আমার বোম্বাই প্রবাস.pdf/২৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমার বোম্বাই প্রবাস २९१ সুবিধা পাইলেন না । পেশওয়ার অজ্ঞাতসারে স্বেচ্ছানুসারে তাহারা সন্ধি লিগ্রহ করিতে লাগিলেন ও রাজ্যরক্ষার্থে সেনা নিয়োগ না করিয়া স্বার্থ সিদ্ধিতেই নিযুক্ত করিতেন। কালক্রমে তাহারা নিজে নিজেই সর্ব্বেসর্ব্ব হইয়া উঠিলেন,-পেশওয়ার অধিকার নাম মাত্র । সাতারার রাজা সম্বন্ধে যেমন পেশওয়া, পেশওয়ার সম্বন্ধে তদ্রুপ র্তাহার ভূত্যবর্গ। পুণায় দলাদলি পুণা দরবার দুই দলে বিভক্ত। একদল রাখোবার পক্ষ -অপর দল মৃত নারায়ণরাওয়ের পত্নী গঙ্গাবাইয়ের পক্ষ। গঙ্গাবাই তখন গর্ভবতী, সুরক্ষিতভাবে পুরন্দর দুর্গে অবস্থিতি করিতেছিলেন। রাঘোৰা সৈন্তসামন্ত লইয়া স্বপক্ষ সমর্থনে যত্নশীল হইলেন ; প্রথম প্রথম কতকটা কৃতকার্য্যও হইয়াছিলেন। তিনি যুদ্ধে জয়ী হইয়া বিপক্ষ সেনাপতিকে গ্রেপ্তার করিলেন কিন্তু বিধাতা তাহার প্রতিকুল । পুণার সিংহাসন স্পর্শ করেন, ইতিমধ্যে তাহার মাথায় বজ্রপাত সদৃশ সংবাদ আসিল যে রাণীর পুত্র-সন্তান জন্মিয়াছে ; —চল্লিশ দিন গত হইলে শিশু-রাজার রীতিমত রাজ্যভিষেক ক্রিয়া সম্পন্ন হইল। জ্যেঠা অপেক্ষাও বড় এই অর্থে “সওয়াই” মাধবরাও নামে শিশুর নামকরণ হইল। এই সঙ্কটে হোলকর সিন্দিয়ার সাহায্য লাভে নিরাশ্বাস হইয় রাবোবা ইংরাজদের শরণাপন্ন হইলেন। বম্বে গবর্ণমেণ্ট অর্থ ও ভূমিলাভ লালসায় তাহার পক্ষে অস্ত্রধারণে প্রতিশ্রুত হইলেন। রাঘোব ও বোম্বাই গবর্ণমেণ্ট ১৭৭৫ সালে রাঘোব ও বোম্বাই গবর্ণমেণ্টের মধ্যে যে সন্ধি স্থাপন হয় তাহার নাম সুরাট সন্ধি ; ইহার তাৎপর্য্য এই যে, ইংরাজের রাঘোবাকে সসৈন্ত পুণায় পৌছাইয়া দিয়া পেশওয়া সিংহাসন প্রত্যপণ করিবেন–রাধোবা ইংরাজদেৱ পুরস্কারস্বরূপ বাসীন সালসেট প্রভৃতি কতকগুলি লোভনীয় স্থান ছাড়িয়া দিবেন। রঘোবার সহিত এইরূপ বন্দোবস্ত সুপ্রীম গবর্ণমেণ্টের মনঃপূত হয় নাই। মুরাট সন্ধির পর পুরন্দর সন্ধি, এই প্রকার নানা পরিবর্তন ও সংশোধনের পর অবশেষে ১৪ই নবেম্বর ১৭৭৮ সালে রাঘোবার সহিত নুতন সন্ধি স্থাপিত হইল। এই সন্ধিসূত্রে ইংরাজ ও মারাঠীদের মধ্যে যুদ্ধারম্ভ হয়।