পাতা:আমার বাল্যকথা ও আমার বোম্বাই প্রবাস.pdf/২৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমার বোম্বাই প্রবাস २२१ পেশওয়ার আত্মহত্য যে অনর্থপাতের কথা সুচিত হইল তাহ মাধবরাও পেশওয়ার আত্মহত্য । র্তাহার বয়স যদিও বিংশতি বৎসর, তথাপি নানা র্তাহার সহিত নাবালকের মত ব্যবহার করিতেন, তাহাকে স্বাধীনভাবে কার্য্য করিতে দিতেন না । ইচ্ছামত র্তাহাকে আপনার ভাইদের সঙ্গে মিশিতে দিতেন না –নানার ষড়চক্রে রঘোবার তিন পুত্র কয়েদ ছিলেন, বাজিরাও তাহদের জ্যেষ্ঠ। এই বাজিরাও শাস্ত্রালাপ, শস্ত্রনৈপুণ্য রূপে গুণে বিখ্যাত ছিলেন। মাধবরাও সর্ব্বদাই তাহার গুণানুবাদ শুনিতে পাইতেন। কিসে তাহার কারামুক্তি হয়, তাহার সহিত দেখা সাক্ষাৎ আলাপ পরিচয় হয়, পেশওয়ার আন্তরিক ইচ্ছ। নানার মত ইহার সম্পূর্ণ বিপরীত। তিনি জানেন রাঘোবাই যত অনর্থের মূল—তাহার পুত্রদের প্রশ্রয় দিলে রাজ্যের অনিষ্ট বই ইষ্টসিদ্ধির সম্ভাবনা নাই। তিনি এই ভাবে পেশওয়াকে যতই বুঝাইবার চেষ্টা করেন, ভ্রাতার প্রতি অনুরাগ তাহার ততই আরো বৃদ্ধি হয়। মাধবরাও অবসর বুঝিয়া বাজিরাওকে চরের হাত দিয়া পত্র লিখিয়া পাঠান, এইরূপে গোপনে শহীদের পত্রব্যবহার প্রবর্ত্তিত হয় । এক পত্রে বাজিরাও লেখেন “আমরা দুজনেই বন্দী, তুমি পুণায় আমি জুনরে ; কিন্তু আমাদের মন স্বাধীন--ভালবাসার উপর পরের কোন অধিকার নাই। যদি আমাদের পরম্পরের ভ্রাতৃসৌহার্দ অটল থাকে, আমরা যদি আমাদের পিতৃপিতামহের কীর্ত্তি রক্ষা করিয়া চলি, সময়ে আমরাও কৃতী হইব।” নানা এই ব্যাপার জানিতে পারিয়া রাগে জলিয়া উঠিলেন, বাজিরাওয়ের বন্ধন দ্বিগুণিত করিলেন, মাধবরাওকে নানা প্রকারে তিরস্কার করিতে লাগিলেন। মাধবরাও রাগ করিয়া ঘরে বন্ধ হইয়া রছিলেন। বিজয় দশমীর দিন দস্তুর মত দরবার হইল। পেশওয়া যদিও বাধ্য হইয়া সে উৎসবে যোগ দিলেন, কিন্তু কিছুতেই তাহার মনের কষ্ট নিবারণ হইল না। তিনি জীবনের প্রতি আস্থাশূন্ত উদাস হইয়া উৎসবের দুদিন পরে প্রাসাদের ছাতের উপর হইতে পড়িয়া আত্মহত্যায় প্রাণত্যাগ করিলেন । পেশওয়া বাজিরাও ১৭৯৬—১৮১৭ এই ঘটনায় পুণায় হুলস্থূল বাধিয়া গেল। রাজ-সিংহাসনে কে বসিবে এই এক বিষম সমস্ত । রাখোবার জ্যেষ্ঠ পুত্র বাজিরাও তাহার দ্যায্য অধিকারী, কিন্তু মন্ত্রীবর্গের মধ্যে আর এক প্রস্তাব উঠিল। তাহদের মন্ত্রণ এই যে, মৃত মাধবরাওয়ের পত্নী যশোদাবাই বাজিরাওয়ের কনিষ্ঠ চিমনাঙ্গীকে পোষ্যপুত্র গ্রহণ করেন এবং চিমনাঙ্গীকে পেশওয়া পদে অভিষিক্ত করা হয় । নানা এই প্রস্তাবের পোষকতা করিলেন, তাহ