পাতা:আমার বাল্যকথা ও আমার বোম্বাই প্রবাস.pdf/৩০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমার বোম্বাই প্রবাস ২ ৩ দুজনের একত্রে পানভোজন হয়। সন্ধার সময় শাস্ত্রী বিঠোবা মন্দিরে পেশওয়ার সহিত সাক্ষাৎ করিতে যান। পেশওয়ার মধুবালাপে প্রীত হইয়। যেমন তিনি মন্দিরের বাহির হইলেন অমনি জল্লাদের খড়গাঘাতে ব্রাহ্মণের অপঘাত মৃত্যু হইল। এই ব্রহ্মহত্যার মূল প্রবর্তৃক ত্রিম্বব জী। কিন্তু পেশওয়া যে নিতান্ত নির্দোষী ছিলেন তাহ নহে— র্তাহাকেও সত্বর এ পাপের প্রায়শ্চিত্ত ভোগ করিতে হইল। বাজিরাওয়ের রাজ্যে শমন-ডঙ্কা বাজিয়া উঠিল । রেসিডেণ্ট এলফিনিষ্টন সুবিচক্ষণ এলফিনিষ্টন সাহেব তখন পুণায় ব্রিটিষ কার্য্যকর্ত্ত । ত্রিম্বকঞ্জী এই হত্যকাণ্ডের মূলপ্রবর্তক সপ্রমাণ হওয়াতে এলফিনিষ্টন তাহাকে পেশওয়ার নিকট হইতে চাহিয়া পাঠান। বাজিরাও প্রথমতঃ ইতস্তত করেন, পরে তাড়া পাইয়। অগত্যা প্রিয়তম ত্রিম্বকজীকে ইংরাজহস্তে সমর্পণ করিতে বাধ্য হইলেন--ত্রিম্বকজ থানার দুর্গে বন্দী রহিলেন । তাহার উপর ইউরোপীয় সান্ত্রীদের চৌকি পাহারা । কতকদিন পরে তিনি ইউরোপীয় গার্ডদের চক্ষে ধূলি দিয়া পলায়নপূর্বক পাহাড় পর্ব্বতে অদৃষ্ঠভাবে ফিরিতে লাগিলেন । বাজিরাও এইক্ষণে ইংরাজদের তাড়াইবার নানান পন্থা দেখিতে লাগিলেন । এই অভিপ্রায়ে সিন্দে হোলকর নাগপুররাজ পিণ্ডারী দস্থ্যদল, এই সকূল লোকদের সঙ্গে ষড়যন্ত্রে সৈন্য সংগ্রহ করিতে থাকেন। র্তাহার সৈন্ত সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি হইতে চলিল এবং কুলি ভীল প্রভৃতি বস্ত জাতির মধ্য হইতে সৈন্ত সংগ্রহ উদ্দেশে ত্রিম্বকজীকে অর্থসাহায্য জন্ত পঠানো হইল। এলফিনিষ্টন সাহেব চরমুখে সমস্ত বৃত্তান্ত অবগত হইতেছেন, বাজিলাও এইরূপ আচরণে নিজের কত হানি করিতেছেন–রাজ্যকে কি ঘোর সঙ্কটে ফেলিবার উদ্যোগ করিতেছেন, ইত্যাদি র্তাহাকে কত বুঝাইলেন। তাহাতে যখন কোন ফল হইল না, তখন পেশওয়াকে স্পষ্ট বলা হইল, “ত্রিম্বক জীকে দেশান্তরিত করিতে হইবে ; যদি না কর তাহা হইলে ইংরাজদের সঙ্গে নিশ্চয়ই যুদ্ধ বাধিবে । এই বেলা প্রতিজ্ঞাপত্র লিখিয়া দাও এবং এই করারের বন্ধকস্বরূপ তুর্গঞ্জয় আমাদের হস্তে রাধিয়া দাও নইলে পুণা এখনি সৈন্তবেষ্টিত হইবে।” পরে পেশওয়াকে আঃে পূ৯ে বাধিয়া ফেলিবার অভিপ্রায়ে তাহাকে পুর্ব্বাপেক্ষা আরো কঠোর সন্ধিবন্ধনে আবদ্ধ করিলেন। অবশেষে গবর্ণর জেনারেলের আদেশে ক্রমে পুণর সন্ধি স্বাক্ষরিত হইল। তাহার স্বাধীনতার যাহা কিছু অবশিষ্ট ছিল, তাহ সমূলে নির্ম্মল হইল। - S. o.