পাতা:আমার বাল্যকথা ও আমার বোম্বাই প্রবাস.pdf/৩১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

28b. আমার বোম্বাই প্রবাস শঙ্করাচার্য্য মারাঠা দেশে শ্রীমৎ শঙ্করাচার্য জগদগুরু বলিয়া পূজিত। এই ক্ষণজন্ম মহাপুরুষ প্রশ্বর ধীশক্তিসম্পন্ন সর্ব্বশাস্ত্র-বিশারদ অদ্বৈতবাদী পণ্ডিত ছিলেন। যে সকল ব্রাহ্মণাচার্য্য বৌদ্ধমত খণ্ডন করিয়া হিন্দুধর্ম্ম পুনরুজ্জীবনের প্রয়াসী ছিলেন, তিনি র্তাহীদের অগ্রগণ্য । তাহার জীবনবৃত্ত যাহা কিছু পাওয়া যায় তাহা সন্তোষজনক বলা যায় না। আনন্দগিরিকৃত শঙ্কব দিগ্বিজয় প্রভৃতি কতিপয় গ্রন্থে শঙ্করের জীবনী এত প্রকার অলৌকিক ব্যাপারে জড়িত যে সত্য মিথ্যা পৃথক করা সহজ নহে। শঙ্করের সন্ন্যাস গ্রহণবৃত্তান্ত তাহার নমুনাস্বরূপ দেওয়া যাইতে পারে। বাল্যকাল হষ্টতেই তিনি সন্ন্যাস গ্রহণ সংকল্প মনে মনে পোষণ করেন । কিন্তু জননীকে তাহার অভিলাষ জানাইলে জননী একান্ত কাতর হইয় পড়েন, কিছুতেই তাহার অনুমতি পান না, অথচ মাতৃ আজ্ঞ না পাইলেও নয়। কথিত আছে, একদা তিনি তাহার গৃহসমীপবর্ত্তী নদীতে অবগাহন করিতেছেন, এমন সময় এক কুম্ভীর র্তাহাকে আক্রমণ করিল। শঙ্কর উচ্চৈঃস্বরে জননীকে ডাকিয় বলিতে লাগিলেন, “কুমীর আমার পা ধরিয়া টানিয়া লইয়া যাইতেছে, মা আমাকে শীঘ্র রক্ষা করুন।” জননী কি উপায়ে সন্তানকে বাচাইতে পরিবেন ভাবিয়া পান না। তখন শঙ্কর বলিলেন, “আমার জীবন রক্ষার এক উপায় আছে। যদি আমি সংসাবের মায় কাটাইয়া সন্ন্যাস গ্রহণ করি, তাহা হইলে এই কুম্ভীর এখনি আমার পা ছাড়িয়া দিবে। আপনার অনুমতি পাইলেট আমার জীবন রক্ষা হয়।” মাত অগত্য পুত্রের সন্ন্যাস গ্রহণের অনুমতি দিলেন। কুম্ভীর ও আপন গ্রাস ছাড়িয়া চলিয়া গেল। এইরূপ বিচি স্ত্র দৈব ঘটনাযোগে তাহার জীবনকথা অনুরঞ্জিত। ঐতিহাসিক প্রমাণ দ্বারা শঙ্করচরিত যতদূর জানা গিয়াছে তাহ সংক্ষেপে এই – f খৃষ্টাব্দের অষ্টম শতাব্দীর শেষভাগে তিনি প্রাদুর্ভূত হন । কেরল-প্রাস্তে ( মালাবার ) ব্রাহ্মণ কুলে তাহার জন্ম। অনতিকাল মধ্যে তিনি অলোকসামান্ত প্রতিভাবলে পণ্ডিত সমাজে খ্যাতি লাভ করিলেন। তিনি সন্ন্যাসাশ্রম গ্রহণ করিয়া কাশী, কাঞ্চী, কর্ণাট, কামরূপ প্রভৃতি নানা দেশ পরিভ্রমণপূর্বক সে সময়কার প্রচলিত নানা মত খণ্ডন কবিয়া অদ্বৈতবাদ সংস্থাপন কবেন। এই বাগ যুদ্ধে জয়লাভ করিয়৷ শঙ্কর দিগ্বিজয় বলিয়৷ ঘোষিত । জীবনের শেষভাগে তিনি কাশ্মীর রাজ্যে গমন করেন এবং তত্রত্য প্রতিপক্ষদিগকে বিচারে পরাস্ত করিয়া শারদীপীঠে অধিরূঢ় হয়েন । সর্ব্বজ্ঞ ব্যতীত কেহ সেই গুহে প্রবেশ করিতে পারেন না। দেবীর গৃহের চতুর্দিকে চারিটি মণ্ডপ আছে । * “প্রাচ্য পণ্ডিতেরা

  • শঙ্করাচার্য্য—শরৎচন্দ্র শাস্ত্রী প্রণীত ।